রহমত নিউজ ডেস্ক 26 January, 2023 06:47 PM
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। যেহেতু র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ একটি রাজনৈতিক বিষয়, তাই এর সমাধানের জন্য শুরু থেকেই জোরালোভাবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও ভবিষ্যতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা যাতে না আসে, সে ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। র্যাব, আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা, আইন মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ মিশনের মধ্যে নিয়মিতভাবে সমন্বয় করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ (২৬ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ তুলে ধরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর পরই আমি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলি। সে সময় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে কাজ করবে, সে ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা হয়। পরবর্তীতে তারই আমন্ত্রণে ওয়াশিংটন সফর করে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করি। বৈঠকে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরি। ওই সফরে সিনেটর, কংগ্রেসম্যানসহ বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে বৈঠক হয়। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তাদের সমর্থনের অনুরোধ করি। কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাস গঠনের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করি।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সংগঠন বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিশেল জে সিসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে আলোচনা করেছেন বলেও জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই সময়ে পররাষ্ট্রসচিব মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলেই-সহ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের গৃহীত উদ্যোগের প্রশংসা করেন। জাতিসংঘ সম্মেলন চলাকালে পররাষ্ট্রসচিব, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত, আম্বাসেডর অ্যাট লার্জ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিবসহ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ককাসের তিনজন কো-চেয়ার কংগ্রেসম্যান গ্যারি ই. কনোলি, কংগ্রেসম্যান স্টেভ জে. কোবেট এবং কংগ্রেসম্যান ডুয়াইট ইভান্সের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক হাউজ কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগরি এম. মিকসও অংশ নেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ককাস-এর সদস্য স্টেভ জে কোবেট যুক্তরাষ্ট্রের সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত হননি। ওয়াশিংটন ডিসিস্থ দূতাবাস বাংলাদেশ ককাসে আরেকজন সদস্য যুক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে আসা মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু-এর সঙ্গে সাক্ষাতে র্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আলোচিত হয় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই সময় ডেনাল্ড লু বর্তমান র্যাবের কার্যক্রমের বিশেষ প্রশংসা করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাস আইনি সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ব্যাপারে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।