| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক এশিয়া দিল্লির জামিয়া মিলিয়ার ১০ শিক্ষার্থী আটক


দিল্লির জামিয়া মিলিয়ার ১০ শিক্ষার্থী আটক


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     26 January, 2023     11:46 AM    


ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসির তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া : দি মোদী কোয়েশ্চেন’  প্রদর্শন ইস্যুতে দিল্লির প্রখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।    

বিবিসির তথ্যচিত্র প্রদর্শনের ঘোষণা দিয়ে পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগে আজ (বুধবার) প্রথমে তিন শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই শিক্ষার্থীদের আটকের প্রতিবাদে আন্দোলনরত আরও ৭ শিক্ষার্থীকেও পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। প্রধান প্রক্টরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।   

বুধবার (২৫ জানুয়ারি) দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বিবিসি ডকুমেন্টারির স্ক্রীনিং নিয়ে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে তোলপাড় সৃষ্টির অভিযোগে ছাত্রদের আটক করা হয়েছে। জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রক্টরের নির্দেশে বিবিসি ডকুমেন্টারি প্রদর্শনের আগে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বিবিসির তথ্যচিত্র প্রদর্শন থেকে বিরত থাকতে বলেছিল।  

গত (মঙ্গলবার) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘নিষিদ্ধ’ ওই তথ্যচিত্রটি দেখাতে গিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরোধিতার মুখে পড়ার অভিযোগ তুলেছিলেন দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর শিক্ষার্থীদের একাংশ। এ বার এই তথ্যচিত্রের প্রদর্শনী নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত হল জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায়।   

বুধবার সন্ধ্যায় তথ্যচিত্রটি দেখানোর পরিকল্পনা করে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন ‘এসএফআই’। গতকাল (মঙ্গলবার) তাদের এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল ছাত্র সংগঠনটি। এর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে কোনও অবৈধ এবং অননুমোদিত জমায়েত করতে দেওয়া হবে না।  

ওই ইস্যুতে আজ সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে যায় পুলিশের বিশাল বাহিনী। তাদের সঙ্গে ছিল কাঁদানে গ্যাসের সেলও। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ছাত্র সংগঠনটির দাবি, পুলিশ পাঠিয়ে তাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।  

দু’দশক আগে গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় থাকার সময়ে  গোধরাকাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কথা তুলে ধরা হয়েছে বিবিসির এক ঘণ্টার তথ্যচিত্রে। এ নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি বলে সরকারিভাবে মন্তব্য করা হয়েছে। তথ্যচিত্রে গুজরাট গণহত্যার সময়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা সম্পর্কে সমালোচনা থাকায় একাধিক ইউটিউব ভিডিও প্রচার ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকি ইউ টিউবের লিঙ্ক থাকায় ৫০টির বেশি টুইটার পোস্ট ব্লক করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতে কার্যত ওই তথ্যচিত্রের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ওই ঘটনাকে ‘সেন্সরশিপ’ বলে অভিহিত করেছেন বিরোধীরা।   

‘বিবিসি’ অবশ্য তথ্যচিত্রটি ‘গভীরভাবে গবেষণার’ পরে তৈরি বলে দাবি করেছে। বিবিসি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ সম্পাদকীয় মাপকাঠিকে মান্যতা  দিয়ে গভীর গবেষণার পরে ওই তথ্যচিত্র তৈরি করা হয়েছে। ব্যাপক অংশের কণ্ঠস্বর, সাক্ষ্য, বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া হয়েছে। অনেক ধরনের অভিমত রয়েছে। তার মধ্যে বিজেপি’র সঙ্গে যুক্তদের মতামতও রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

-পার্সটুডে