মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ঢাবির বিজয় একাত্তর হলে শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা!
রহমত নিউজ 09 November, 2022 07:57 PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাবির বিজয় একাত্তর হলে এক শিক্ষার্থীকে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। বন্ধুরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করান। মারধরের শিকার শিক্ষার্থী প্রক্টর এবং হল প্রাধ্যক্ষ বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিজয় একাত্তর হলের যমুনা ব্লকের ১০০১১ নম্বর কক্ষে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। তদন্ত কমিটি গঠন করে করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির।
অভিযুক্ত মোনাফ প্রান্ত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য। অন্যদিকে ভুক্তভোগী রাসেল মাহমুদ একই শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী। দুজনই হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুসের অনুসারী। আবু ইউনুস ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের রাজনীতি করেন।
জানা যায়, হল ছাত্রলীগের কমিটি হওয়ার পর এলাকাভিত্তিক (উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ) দ্বন্দ্ব এড়াতে মঙ্গলবার রাতে ছাত্রদের বিভিন্ন কক্ষে নতুন করে শিফট করা হয়। ভুক্তভোগী রাসেল মাহমুদের কক্ষে অভিযুক্ত প্রান্তকে শিফট করা হয়। ভুক্তভোগী কক্ষ থেকে বের হতে একটু দেরি হওয়ায় দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। হঠাৎ করেই প্রান্ত তাকে গালি দিয়ে রড দিয়ে আঘাত করেন।
ভুক্তভোগী রাসেল মাহমুদ বলেন, “রুম পরিবর্তনের সময় আমি রিডিং রুমে ছিলাম। রুমে এসে দেখি প্রান্ত (অভিযুক্ত) আমার রুমে শুয়ে আছে। আমি ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে সে বলে, ‘এখনও রুম থেকে সব জিনিস নিয়ে যাস নাই কেন? তাড়াতাড়ি নিয়ে যা।’ এ কথা বলেই আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ে রড দিয়ে আঘাত করে। আমি হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করি। আমার কোমর, হাত ও পেছনে রড দিয়ে বাড়ি দেয় সে। পরে বন্ধুরা এসে আমাকে ঢামেকে নিয়ে আসে।’
প্রান্তর সহপাঠী কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রান্ত খুবই উগ্র মেজাজের ছেলে। সে বিভিন্ন সময়ে বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা, জুনিয়রদের মারধর করে।
অভিযুক্ত মোনাফ প্রান্ত বলেন, ‘তিলকে তাল বানানো হচ্ছে। বিষয়টি এরকম নয়। এটা নিয়ে অন্যরা সুযোগ নিচ্ছে।’
হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু ইউনুস বলেন, ‘হলে এলাকাভিত্তিক ঝামেলা যেন না হয় সেজন্য গতকাল সবার সিট পরিবর্তন করে দেওয়া হয়। আমরা এটি তদন্ত করে দেখব এবং সত্য প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ‘এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, ‘একজন শিক্ষার্থী অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হলের নিয়ম মেনেই হলে থাকতে হবে। অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই।’