| |
               

মূল পাতা জাতীয় ৪ নভেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ দিন : রাষ্ট্রপতি


৪ নভেম্বর বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ দিন : রাষ্ট্রপতি


রহমত নিউজ ডেস্ক     04 November, 2022     12:39 PM    


গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সংবিধানের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ৪ নভেম্বর, জাতীয় সংবিধান দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি তাৎপর্যপূর্ণ ও স্মরণীয় দিন। ১৯৭২ সালের এই দিনে গণপরিষদে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়। সংবিধান একটি রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা ও বিচার বিভাগের কার্যপরিধিসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়ামক দলিল। সংবিধান প্রণয়নের সুবর্ণজয়ন্তীতে ৪ নভেম্বরকে ‘জাতীয় সংবিধান দিবস' হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।আজ (৪ নভেম্বর) শুক্রবার ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, জাতীয় সংবিধান দিবস উপলক্ষে পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যাঁর নেতৃত্ব ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় স্বাধীনতার পর খুব কম সময়ের মধ্যে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা ও তাঁদের মতামতের ভিত্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধান রচিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁর সুদীর্ঘ সংগ্রামের পথপরিক্রমায় সমগ্র জাতিকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। তিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং তাঁরই নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন এবং ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণাঙ্গ সংবিধান কার্যকরী হওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে (ক) স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ১০ এপ্রিল, ১৯৭১; এবং (খ) বাংলাদেশের অস্থায়ী শাসনতন্ত্র আদেশ, ১৯৭২; ১১ জানুয়ারি, ১৯৭২ এ দু’টি অর্ন্তবর্তীকালীন সংবিধান ছিল। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ রাষ্ট্রপতি ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ আদেশ, ১৯৭২’ জারি করেন। উক্ত আদেশের মাধ্যমে সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদের ১৬৭ জন এবং প্রাদেশিক পরিষদের ২৯৮ জন সদস্যকে নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হয়। ১৯৭২ সালের ১০ এপ্রিল গণপরিষদের ১ম অধিবেশনে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করা হয়। বিলটি উত্থাপনের পর বিলের ওপর গণপরিষদে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর গণপরিষদের সদস্যগণ হাতে লিখিত সংবিধানের মূল কপিতে স্বাক্ষর করেন এবং ১৬ ডিসেম্বর থেকে তা কার্যকর হয়। বিজয় অর্জনের এক বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু দেশকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান উপহার দেন যা পৃথিবীর ইতিহাসে খুবই বিরল। বাংলাদেশের সংবিধান পৃথিবীর সুলিখিত সংবিধানগুলোর মধ্যে অন্যতম। সংবিধানের মূলনীতি অনুসরণের মাধ্যমে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার জন্য তিনি সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। জাতীয় সংবিধান দিবস উদযাপনে সাফল্য কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।