| |
               

মূল পাতা রাজনীতি বিএনপি আওয়ামী দুঃশাসন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে : রিজভী


আওয়ামী দুঃশাসন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে : রিজভী


রহমত ডেস্ক     21 September, 2022     09:11 PM    


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নেতাকর্মীদেরকে হত্যা ও জখমের প্রতিবাদে কেন্দ্রের পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে বুধবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জ শহরের মুক্তারপুরে সদর উপজেলা বিএনপির সমাবেশে জনগণ ও নেতাকর্মীরা জমায়েত হলে বিনা উস্কানিতে পুলিশ হামলা চালিয়ে ও নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে শতাধিক নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করেছে। আহতদের মধ্যে বিএনপি নেতা শাওন, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর, ছাত্রদল নেতা তারিক, বিএনপি কর্মী শিপন, তপন, রুবেল, সোহেল, হাফিজুল, হাসান গুলিবিদ্ধ হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গুরুতর আহতদের মধ্যে অনেককেই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন বধ্যভূমি। আওয়ামী দুঃশাসন এখন ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা করা যেন ওদের খেলায় পরিণত হয়েছে। এই খেলার কথা তারা কয়েকদিন আগেই ঘোষণা দিয়েছিল। এই খেলার পরিণতি এখন দেশব্যাপী দেখা যাচ্ছে। সরকারের নির্যাতনের মাত্রা দেখে মনে হচ্ছে এরা যেন প্রতিনিয়ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বুক চিরে রক্তপান করবে।

আজ (২১ সেপ্টেম্বর) বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মুন্সিগঞ্জে জেলা বিএনপির সমাবেশে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, পুলিশের এই নির্মম হামলায় সাংবাদিকরাও রেহাই পায়নি। এই কর্মসূচি ছিল অসহায় ও বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কর্মসূচি। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে জনগণ ভয়াবহ দুর্বিষহ অবস্থার মধ্যে আছে। সুতরাং জনগণের দাবির প্রতি সংহতি জানাতেই বিএনপির কর্মসূচির ওপর সরকারের পেটোয়া বাহিনী ক্ষুধার্ত নেকড়ের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। আজকেই (বুধবার) তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিএনপির সব সমাবেশ প্রতিহত করা হবে।’ এর আগে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বিএনপির কর্মসূচি প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও শাসকদলের ক্যাডারদের বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালাতে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং ঘোষণা দিয়েই বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে সরকার। সরকারের আচরণ দস্যু দলের মতো।

তিনি বলেন, কুৎসিত মাফিয়া শাসনের কারণে দেশে যে দুঃশাসন বিরাজ করছে, আজকে মুন্সিগঞ্জের ঘটনা তার জঘন্য বহিঃপ্রকাশ। এরা বিএনপির নারী-পুরুষ কাউকেই রেহাই দিচ্ছে না। বিপন্ন নারীর আকুতি ও আর্তনাদে তারা উল্লাস প্রকাশ করছে। দেশের প্রবীণ রাজনীতিবিদ সেলিমা রহমান ও সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলুর সহধর্মিনী শামীমা বরকত লাকীসহ মহিলা দলের নেত্রীদের যেভাবে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে তা ইতিহাসে জঘন্যতম ঘটনা হিসেবে লিপিবদ্ধ থাকবে। এই ঘটনা একুশ শতকে মানবসভ্যতার অগ্রগতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা আদিম অন্ধকারের যুগকেই ফিরিয়ে এনেছে। পুলিশ ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলা করিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, খুন-জখম ও পঙ্গু করার পর প্রধানমন্ত্রীসহ ওবায়দুল কাদের ও হাছান মাহমুদ সাহেবরা যে ভাষায় কথা বলছেন তাতে মনে হয়-এসব সহিংস ঘটনায় তারা মেতে উঠেন আনন্দে।

তিনি আরো বলেন, দুর্বিনীত আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর একমাত্র আরাধ্য যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় থাকা। এজন্য জনগণের সব অধিকারকে বস্তাবন্দী করে বর্তমান ভোটারবিহীন রক্তচোষা সরকার পরিকল্পিতভাবে বিরোধী দল নিধনে নেমেছে। যেন ক্ষমতার প্রশ্রয়ে একদল নরপিশাচ সংঘবদ্ধভাবে পৈশাচিক উল্লাসে মেতে উঠেছে। তবে দেশের মানুষ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে। গুলি করে, হত্যা করে, হামলা করে প্রতিবাদী কন্ঠরোধ করা যাবে না, সরকারের পতন ঠেকানো যাবে না। মুন্সিগঞ্জে পুলিশি হামলা, গুলিবর্ষণ ও নেতাকর্মীদের গুরুতর আহত করার পৈশাচিক ঘটনায় আমি তীব্র ধিক্কার, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। গুরুতর ও আহত নেতাকর্মীদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।