রহমত ডেস্ক 18 September, 2022 11:19 PM
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড ইস্যুতে জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে স্বাধীনতার সপক্ষের সকল শক্তিকে একত্র হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক বলেছেন, পৃথিবীর ইতিহাসে এতো সংক্ষিপ্ততম সময়ের মধ্যে এতো বেশি সংখ্যক লোককে হত্যা করার নজির নেই। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী জেনোসাইডের সেই নৃশংসতার নজির সৃষ্টি করেছে। হত্যা, ধর্ষণ, লুঠতরাজ, উৎখাত, উৎপীড়নসহ একটি জাতিকে বিপন্ন করার সকল চেষ্টাই তারা করেছে। স্বাধীনতার পর ৫১ বছর অতিক্রান্ত হলেও এই নৃশংসতার ঘটনাকে জেনোসাইড হিসেবে জাতিসংঘ আজো স্বীকৃতি দেয়নি।
আজ (১৮ সেপ্টেম্বর) রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে বাংলাদেশ জেনোসাইড ইস্যুটি নিয়ে জোরালো আলোচনার পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে আমরা একাত্তর, প্রজন্ম ’৭১ এবং বাসুগ যৌথভাবে আয়োজিত ‘১৯৭১-এ বাংলাদেশ জেনোসাইডের স্বীকৃতি চাই: জাতিসংঘ স্বীকৃতি দাও’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাসস’র বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজা জেসমিনের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন, আমরা একাত্তরের প্রধান সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রম্য লেখক হিলাল ফয়েজী। বক্তব্য রাখেন প্রজন্ম ’৭১ এর সভাপতি আসিফ মুনীর এবং জেনোসাইড বিশেষজ্ঞ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদীপ কুমার দত্ত।
মুক্তিযুদ্ধের ৫১ বছর পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনের ৩ নম্বর এজেন্ডায় মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড ইস্যুটি অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ-বাসুগ, আমরা একাত্তর এবং প্রজন্ম একাত্তরের সম্মিলিত আবেদনে এই এজেন্ডা অন্তর্ভূক্ত করানো সম্ভব হয়েছে। একই সঙ্গে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ আগামী ৩ অক্টোবর, বাংলাদেশ জেনোসাইড ইস্যুতে আলোচনার জন্য জেনেভায় জাতিসংঘ ভবনে একটি হল বরাদ্দ করেছে। সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকদের পক্ষ থেকে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ০৩ অক্টোবর পর্যন্ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিক্ষোভ, সমাবেশ, মানববন্ধন ও প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের আগামী ৩ অক্টোবরের আলোচনায় এই দাবিকে জোরালোভাবে উপস্থাপনের জন্য স্বাধীনতার সপক্ষের সকল শক্তিকে একযোগে কাজ করতে হবে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড সম্পর্কে বুকলেট, পেপার, স্থিরচিত্র, ভিডিও উপস্থাপন করে বিষয়টি জাতিসংঘের নজরে আনতে হবে। মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশে সংঘটিত জেনোসাইড এর আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় অব্যাহতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সাপোর্ট গ্রুপ-বাসুগ, আমরা একাত্তর, প্রজন্ম একাত্তর, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রকল্প এবং একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মতো সংগঠনগুলোর সম্মিলিত উদ্যোগের ফলে এ প্রচেষ্টা আরো জোরালো হবে। এই দাবি আদায়ের ব্যাপারে স্বাধীনতার সপক্ষের সকল শক্তিকে একত্র হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।