মূল পাতা রাজনীতি আওয়ামী লীগ পুরো জাতির নিকট জিয়া খলনায়ক হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে: শিক্ষামন্ত্রী
জবি প্রতিনিধি 24 August, 2022 06:10 PM
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, 'বঙ্গবন্ধুর বিশ্বাস করতেন পাকিস্তান কাঠামোতে কখনও পূর্ব বাংলার মানুষের উন্নতি সম্ভব নয়। বাঙালি জাতির জন্য তিনি আলাদা স্বাধীন ভূখন্ড চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু প্রথমে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা নিজের মধ্যে ধারণ করেন এবং পরবর্তীতে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকাণ্ডে জিয়ার ভূমিকার কারণে শুধু ইতিহাসবিদই নয়, পুরো জাতির নিকট জিয়া শ্রেষ্ঠ খলনায়ক হিসেবে পরিচিত লাভ করেছে।'
বুধবার (২৪ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আয়োজনে কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড : জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জবি শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ ছিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, 'বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত। তাঁরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ্য নেতৃত্ব দানের মাধ্যমে দেশকে ক্রমশ উন্নতির দিকে ধাবিত করছেন। দেশে অসাম্প্রদায়িক লোক যেমন রয়েছে, তেমনি সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতা বিরোধী লোকও রয়েছে। অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধুর আদর্শভিত্তিক রাজনীতির বিপরীতে রয়েছে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বিরুদ্ধাচারণ ও অপরাজনীতি।'
তিনি বলেন, “বর্তমান সরকার দেশের প্রভূত উন্নয়নে সংকল্পবদ্ধ। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে সারাদেশকে উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হঠকারী কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন নাই। বাঁধা বিপত্তি থাকা স্বত্ত্বেও নিজের জীবনের হুমকি কখনও অনুভব করেন নাই। জনগণের উন্নতির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্যই আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় যেতে হবে।”
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, “বঙ্গবন্ধু শৈশবকাল থেকেই বাঙালি জাতির স্বাধিকারের বিষয়ে সজাগ ছিলেন। মেহনতী মানুষের কল্যাণে নিজের জীবনকে উজাড় করে দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাঙালি জাতির ভাগ্য পরিবর্তন ও দেশকে গড়ার কাজে বঙ্গবন্ধু নিজেকে সম্পূর্ণরূপে আত্মনিয়োগ করেছিলেন।”
উপাচার্য আরো বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ড বিশ্বব্যাপী নিন্দিত। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পিছনে ছিলো সুদীর্ঘ ষড়যন্ত্র। শুধুমাত্র সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের শাস্তির কার্যকর করলেই চলবে না। হত্যাকাণ্ডের সময় সহযোগীরা কোথায় ছিলো, পিছনের কুশীলব কারা ছিল- এসকল তথ্য অনুসন্ধান করতে হবে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পর কারা কারা প্রতিরোধ ও প্রতিবাদ করেছিলো, তাদেরকেও সম্মানীত করতে হবে।”
বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের ইতিহাসের নৃশংস হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, “বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সপরিবারের হত্যাকাণ্ড কোনো আকস্মিক হত্যাকাণ্ড নয়। এই বিষয়ে আরো তথ্য অনুসন্ধান করার প্রয়োজন রয়েছে। মূলত সদ্য স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্যই এই জঘন্য হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিলো।”
আলোচনা সভায় “বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র : পেছনে ফিরে দেখা’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন এবং প্রবন্ধের উপর মূল আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম।
অনুষ্ঠানে ‘জয়তু বঙ্গবন্ধু ১৫ আগস্ট- নির্মম হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর’ শীর্ষক স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, সাংবাদিক প্রতিনিধিবৃন্দ ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।