| |
               

মূল পাতা জাতীয় আইন-আদালত পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো আইনজীবীকে হত্যার হুমকি


পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো আইনজীবীকে হত্যার হুমকি


রহমত ডেস্ক     24 August, 2022     10:38 AM    


পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে পদত্যাগের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো আইনজীবী এরশাদ হোসেন রাশেদকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শাহবাগ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। 

নোটিশে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে আপনি ভারত সরকারকে যে অনুরোধ করেছেন, এটা আপনি করতে পারেন না। কারণ সংবিধানে বলা হয়েছে, জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। আপনি সংবিধানবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। আপনি মন্ত্রী পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে আইনি প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলে জানানো হয়।

মঙ্গলবার (২৪ আগস্ট) সকাল ১০টা ১৬ মিনিটে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো: এরশাদ হোসেন রাশেদকে মোবাইল ফোনে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। 

থানায় দায়ের করা জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, ‘গত ২১ আগস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পদত্যাগ করার বিষয়ে একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করি। বিষয়টি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার ও প্রকাশিত হয়। এর পর থেকে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন নম্বর থেকে আমার মোবাইল নম্বরে কল আসতে থাকে। ফোন করে গালিগালাজ, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও নাশকতার হুমকি দেয়া হয়।’

‘‘সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১৬ মিনিটে আমি আমার কোর্ট চেম্বারে আদালতের মামলার বিষয়ে কাজ করার সময় একটি নম্বর থেকে কল আসে। কল করে আমাকে বলে, ‘সমস্যার সমাধান করবি কি না? আমি কিন্তু ডাইরেক্ট গুলি করে মাইরা ফালাই।’ আমি তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি উত্তরে বলেন, ‘আমি গুলি কইরা মাইরা ফালাই এটাই আমার পরিচয়।’ তারপর আমি ফোন কল কেটে দিই। এরপর সঙ্গে সঙ্গে কল আসলে, আমি কল রিসিভ না করে কেটে দিই। ১০টা ১৯ মিনিটে আমার মোবাইল নম্বরে আবারও অন্য নম্বর থেকে কল আসে। রিসিভ করলে একই ব্যক্তি আবারও আমাকে কোর্টের সামনে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দিলে, আমি কল কেটে দিই।’’

প্রসঙ্গত, গত ১৮ আগস্ট (বৃহস্পতিবার)  সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের জেএম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। শেখ হাসিনা আমাদের আদর্শ। তাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাবে এবং সত্যিকারের সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, অসাম্প্র্রদায়িক একটা দেশ হবে। শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা করতে অনুরোধ করেছি।

এর আগে, গত ১২ আগস্ট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভা শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, বৈশ্বিক মন্দায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। দেশের মানুষ ‘বেহেশতে’ আছে।

এর পর থেকেই সেই বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকিয়ে থাকা ও আসার জন্য ভারতকে কখনো অনুরোধ করেনি, শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। এটি কারো ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে।’

এদিকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেছেন, ‘প্রশ্ন হলো তিনি তো (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) আমাদের দলের কেউ নন। সুতরাং আমাদের দল তার এই বক্তব্যে বিব্রত হওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তবে অনুরোধ করব তাকে যে তার কথাবার্তায়, তার দায়িত্বশীল আচরণের ভেতর দিয়ে এমন কিছু বলবেন না, যাতে কোনো দুষ্ট লোকেরা এর সুযোগ নিতে পারে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারে। সে ব্যাপারে তিনি সতর্ক থাকবেন।’