| |
               

মূল পাতা আরো পাঠকের কলাম উত্তরবঙ্গে খৃস্টান মিশনারীদের অপতৎপরতা


উত্তরবঙ্গে খৃস্টান মিশনারীদের অপতৎপরতা


মুফতী জসিম উদ্দীন     18 August, 2022     10:25 PM    


স্বাধীনতার পর হতে লাল সবুজের এই দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্র থেমে নেই। আন্তঃ সমস্যার পাশাপাশী রয়েছে ভিনদেশী বেনিয়াদের কূটচাল। সেবার আড়ালে করছে মুসলমানদের ঈমানহরণ ও বাংলাদেশকে খন্ডিত করার নীল নকশা। তারই একটি অংশ হলো; খৃস্টান মিশনারী। মিশনারী এটি খৃস্টানদের একটি দাওয়াতী সংস্থা। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে লক্ষ লক্ষ প্রচারকের মাধ্যমে তারা খৃস্টধর্মের দাওয়াত দিয়ে আসছে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ১৬০০ -১৭০০ শতাব্দীতে পর্তুগীজদের সাথে তৎকালীন বাংলা ও ভারতে খৃস্টান মিশনারীরা আগমন করে। পর্তুগীজ ব্যবসায়ীদের ছত্রছায়ায় তারা ২০০ বছর পর্যন্ত খৃস্টধর্ম প্রচার করতে থাকে। পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর তৎকালীন আইয়ুব খান সরকার তাদের সাহায্য করলে তারা আসকারা পেয়ে নেটওয়ার্ক ঢাকাতেও বিস্তৃত করে।

মিশনারীদের ধর্মপ্রদেশ : ধর্মপ্রচারের সুবিধার্থে খৃস্টান মিশনারীরা পুরো বাংলাদেশকে ৬টি ধর্মপ্রদেশ হিসেবে ভাগ করেছে; ১. ঢাকা, এটি তাদের মহাপ্রদেশ, ২. চট্টগ্রাম- দক্ষিণাঞ্চল , ৩. দিনাজপুর - উত্তর পশ্চিমাঞ্চল , ৪. খুলনা , ৫. ময়মনসিংহ , ৬. রাজশাহী।

যেভাবে কার্যক্রম চালায় উত্তরবঙ্গে :  বৃহত্তর রংপুর বিভাগের অধিকাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে।অভাব তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। এই অভাবকে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ধরে খৃস্টান মিশনারীরা বিভিন্ন পলিসি গ্রহণ করে। যেমন: ক. নিরক্ষর মানুষদেরকে ঋণসুবিধা,ঘুর্ণিঝড় ইত্যাদিতে আশ্রয়দান, হাসপাতালে ফ্রী চিকিৎসাসেবা ও তাদের প্রতিষ্ঠিত স্কুুলে অবৈতনিক পাঠদানের সুযোগের ফাঁদে ফেলে মূলতঃ তাদেরকে খৃস্টধর্ম গ্রহণে বাধ্য করে ,অন্যথায় এই সমস্ত ফ্রী সুযোগের টাকা দাবী করে। খ. শিক্ষিত দরিদ্র বেকারদেরকে তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরির প্রলোভন ও বিদেশে উন্নত পড়াশোনার টোপ দিয়ে তাদের মাঝে খৃস্টধর্ম প্রচার করে। গ. সরলমনা মানুষদেরকে বিভ্রান্ত করার জন্য তারা ইংল্যা- থেকে খৃস্টান ইমাম-খতীব প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসে। যাদের কাজ হলো, কুরআন-সুন্নাহের অপব্যাখ্যা করে মানুষের মাঝে সন্দেহের বীজ বপন করা। চট্টগ্রাম ও দিনাজপুরের ১৩ টি মসজিদের ইমাম এমন পাওয়া গেছে, যারা মুসলমান নয়। খৃস্টান মিশনারীদের চর ও এজেন্ট। অহরহ এমন সংবাদ পত্রিকার পাতায় পাওয়া যাচ্ছে। ঘ. কিছু অসাদু রাজনৈতিক নেতা ও সমাজের বখাটে শ্রেণীর মাধ্যমে। যারা সামাজিক অপকর্মে লিপ্ত, তাদেরকে মাদক -ইয়াবা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে খৃস্টধর্ম প্রচার করে। যেমন- কুড়িগ্রাম সদরের এক এলাকার ব্যাপারে জানা যায়, সেখানে ৪০জনের একটি টিম ছিল ; যারা মাদকসেবী হিসেবে পরিচিত ও মুসলমান ছিল। স্থানীয় প্রশাসন রাষ্ট্রীয় নিয়মশৃঙ্খলা রক্ষার্থে সেখানে অভিযান পরিচালনা করলে তারা ‘ধর্ম পরিবর্তনের’ কথা বলে নিজেদেরকে খৃস্টান হিসেবে পরিচয় দেয় এবং মাদক খৃস্টধর্মে বৈধ বলে তা প্রকাশ্যে পান করে । ফলে প্রশাসন নির্বিকার থাকে এবং রাষ্ট্রীয় নিয়মশৃংখলা ব্যাহত হয়।

কি হচ্ছে কুড়িগ্রামের চরে? : চরাঞ্চল এলাকা কুড়িগ্রাম। এ জেলাতে প্রায় ৪১০ টি চর আছে। তার মধ্যে ২০২ টি চরে মানুষের বসবাস। এই চরকেন্দ্রীক চলছে খৃস্টান মিশনারীদের সেবার আড়ালে খৃস্টধর্মের রমরমা প্রচারণা।ফুলবাড়ী থানার গোরকমন্ডল এলাকার একটি চর মিশনারীদের দখলে।সেখানে ৩৯টি পরিবার একসঙ্গে খৃস্টধর্ম গ্রহণ করেছে। উলিপুর থানার মিনাবাজার এলাকায় ৪৫ একর জমি এবং চিলমারী থানার বালাবাড়ীতে ৬০ বিঘা জমি নিয়ে গীর্জা - স্কুল ও খামার তৈরী এবং ভিতরে গুচ্ছগ্রাম প্রতিষ্ঠা করেছে। ভুরঙ্গমারীতে প্রায় শতাধিক এবং একই থানার ভোট হাট ইউনিয়নে ২৫-২৬ পরিবারকে আহলে কুরআনের অন্তরালে খৃস্টান বানিয়েছে। কুড়িগ্রামে প্রায় ১৬ হাজার খৃস্টান রয়েছে। এই জেলাতে তাদের ২০ টির মত গীর্জা, ১৫ টি মিনি স্কুল, ৫টি হাইস্কুল, ৭টি ব্যাপটিস্ট কেন্দ এবং ২০ টির অধিক বিভিন্ন্ এনজিও সংস্থা রয়েছে।

যে সংস্থাগুলোর মাধ্যমে অপতৎপরতা চালায় : ৭১ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে ৩০,০০০ হাজার এনজিও কাজ করে যাচ্ছে। এসব সংস্থাগুলোর অধিকাংশ সেবার অন্তরালে মানুষের ঈমানহরণ ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো: ১. কারিতাস ২. এন.সি.সি.(ননলাইট সেন্ট্রাল কমিটি) ৩. লুথারান মিশন ৪. দ্বীপশিখা ৫. সালভেশন আর্মি ৬. ওয়ার্ল্ড ভিশন ৭. সি.ডি.এস.(সেন্ট্রাল ফর ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস) ৮. আর.ডি.আর.এস.(রংপুর দিনাজপুর রোড এন্ড সার্কেল) ৯. সি.সি.ডি.ভি. (খৃস্টান কমিশন অফ ডেভেলপমেন্ট) ১০. হীড বাংলাদেশ ১১. সেভেন ডে এডভেঞ্চারিস্ট ১২. চার্চ অফ বাংলাদেশ ১৩. পের ইন্টারন্যাশনাল ১৪. সুইডিশ ফ্রেমিশন ১৫. কনসার্ন ১৬. এডরা ১৭. অস্ট্রেলিয়ান ব্যাপটিস্ট সোসাইটি ১৮. এমসিনি ১৯. ওয়াই.ডব্লিউ.সি. ২০. ফেমিলিজ ফর চিলড্রেন ২১. আল হানিফ কল্যাণ ট্রাস্ট ইত্যাদি। এসব সংস্থার ৯০ ভাগ বাজেট খৃস্টধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পিছনে ব্যয় করে। তাই বাংলাদেশ সরকারকে অনুরোধ করবো,এসব এনজিওদের আয়ের উৎস খতিয়ে দেখা এবং যারা বাংলাদেশকে দ্বিখন্ডিত করার চক্রান্তে লিপ্ত তাদেরকে অতি দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা।

লেখক : শিক্ষক, সমাজকর্মী