রহমত ডেস্ক 19 July, 2022 09:58 PM
সিলেট সিটি করপোরেশন-সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, সড়ক ও জনপথ-সওজ বিভাগ সিসিক কর্তৃপক্ষকে সহোযোগিতা করে না। পাঠানটুলা থেকে মদীনা মার্কেটের রাস্তা, সোবাহানিঘাটের রাস্তা, আম্বরখানা থেকে বিমানবন্দর রাস্তা এগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তাদেরকে আমরা বারবার বলেছি সেই রাস্তার পাশের ড্রেনগুলো ঠিক করে দিতে। কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয় না। তারা নিজেরাও ঠিক করেন না, আমাদেরও করতে দেয় না। এর ফলে এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। নগরবাসীর স্বার্থে একে অন্যকে সহযোগিতা করা উচিত।
আজ (১৯ জুলাই) মঙ্গলবার সিলেট নগরভবনের কনফারেন্সরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী সাম্প্রতিক বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায়, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, প্যানেল মেয়র (১) ও কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপনসহ অন্যান্য কাউন্সিলরবৃন্দ ও কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিসিক মেয়র বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে বিভিন্নস্থানে টিলার মাটি ধসে নালা-নর্দমার পানি প্রবাহ আটকে দিয়েছে। যার কারণেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সবকিছুর পর আমি দায় মাথায় নিয়ে নগরবাসীকে আশ্বস্থ করতে চাই সামনেও অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা ঠেকাতে সিলেট নগরজুড়ে ৮টি স্ট্রাইকিং টিম তৈরি করা হয়েছে। যাদের সঙ্গে থাকবেন সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরবৃন্দ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আমি মনিটরিং করব। গত ১৬ জুলাই রাতে যে বৃষ্টি হয়েছে সেটা ছিল এ যাবৎকালে সবচেয়ে কমসময়ে বেশি বৃষ্টিপাত। নগরের নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি অনেক উঁচু এলাকায়ও পানি জমেছে। তবে সেই পানি আবার ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে নেমেও গেছে। এছাড়া সারাদিন রাস্তাঘাটে যে ময়লা জমে সেগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় রাত ১২টার পরে। কিন্তু সেই রাতে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সেগুলো পরিষ্কারের আগেই। এতে রাস্তার ময়লা-আবর্জনা ড্রেনে চলে গিয়ে পানি প্রবাহে বিঘ্ন সৃষ্টি করে।বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখে পরের দিন বিভিন্ন দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সুধীজন, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে নগরভবনের সভাকক্ষে জরুরি মতবিনিময় করা হয়। জলবায়ু পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে সামনেও এমন পরিস্থিতির সৃষ্টির আভাস জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিস। এটিকে মাথায় রেখে আমরা কর্মপন্থা অবলম্বন করেছি। দিনে কিংবা রাতে যেকোনো সময় অতিবৃষ্টি হলে স্ট্রাইকিং টিম জলাবদ্ধতা ঠেকাতে মাঠে নামবে।
নাগরিকদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সিসিক মেয়র বলেন, অনেক নাগরিক ময়লা-আবর্জনা, লেপ-তোষকও ড্রেনের মধ্যে ফেলছেন। এগুলো বন্ধ করতে হবে। সরকারি নির্দেশনায় তো এমন অপরাধে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে। আমরা তো সেটা প্রয়োগ করছি না। সবার সহযোগিতায় আমরা এ নগরকে সাজাতে চাই। সবাই কথায় কথায় খোঁচা দেন, শতশত কোটি টাকার উন্নয়ন গেল কোথায়! এ বিষয়ে বলতে চাই-আমরা প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে ১২২৮ কোটি টাকা শর্ত সাপেক্ষে বরাদ্দ পেয়েছি। শর্ত হচ্ছে বরাদ্দের ২০ শতাংশ অর্থাৎ ২৪৫ কোটি টাকা আমাদেরকেই পূরণ করতে হবে। বাকি ৯৮৩ কোটি টাকা সরকারের কাছ থেকে চারটি অর্থবছরে পাবে সিসিক। এরমধ্যে আমরা ২টি ধাপে ৩২৯ কোটি টাকা পেয়েছি। এই টাকার কাজ চলমান রয়েছে। বাকিটা পর্যায়ক্রমে পাব। তাই কথায় কথায় হাজার কোটি টাকা জলে গেল এমনটি বলা কতটা সঠিক হবে তা আপনারা বিচার করবেন। আমরা যেসব কাজ করাচ্ছি সেগুলো আমাদের ইচ্ছাতে নয়, সরকারি মাস্টারপ্ল্যান অনুসারে। এগুলো মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন ধাপেধাপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়ে তারপর অনুমোদন হয়। দেশের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে আমার টানা ৩ বার সেরা হয়েছি। আমাদের কাজেকর্মে ভুল থাকলে নিশ্চয় সরকারিভাবে আমরা শ্রেষ্ট হতাম না।
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: সিলেট