মূল পাতা জাতীয় নির্বাচন কমিশন নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই : আহসান হাবিব
রহমত ডেস্ক 11 July, 2022 05:04 PM
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, একটি সুন্দর, সুষ্ঠু, অবাধ এবং সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি, আমি সেই সিদ্ধান্তটা নেবো। যে সিদ্ধান্ত দ্বারা জনগণ উপকৃত হবে, যার ভোট সে দিতে পারবে, সন্ত্রাস মুক্ত, অনিয়ম মুক্ত একটি নির্বাচন হবে এবং যেইটার নিয়ন্ত্রণ নির্বাচন কমিশনের কাছে থাকবে।
রবিবার (১০ জুলাই) বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৭ জুলাই থেকে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে ইসি সংলাপ শুরু করতে যাচ্ছে। এর আগে, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম দেখে মতামত দেওয়ার জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে ডেকেছিল নির্বাচন কমিশন-ইসি। সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া এই সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় বিএনপিসহ ১১টি দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি।
আহসান হাবিব বলেন, ইভিএম একটি বহুল আলোচিত বিষয়। আপনারা জানেন যে, সেই প্রথম থেকে বিগত চার মাসে আমরা অনেকগুলো সংলাপ, মতবিনিময় করলাম। সর্বশেষ আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের টেকনিক্যাল প্রতিনিধি নিয়ে ইভিএম সম্পর্কে জানার জন্য দাওয়াত দিয়েছিলাম। অনেকেই এসেছিলেন, কেউ কেউ আসে নাই। অনেকেই সমালোচনা করছেন, আলোচনা করছেন। কিন্তু এটা আশ্চর্যের বিষয় যে, আমরা যখন ইভিএম টেস্ট করার জন্য তাদেরকে (রাজনৈতিক দল) ডাকলাম। তখন কিন্তু বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল তাদেরকে (টেকনিক্যাল পারসন) আনেনি। মাত্র দুই-তিন বা তিন-চারটা দল এনেছিল। আর যারা এসেছিলেন তারা তেমন একটা ভূমিকা রাখেননি বা ইভিএম তেমন একটা চেক করেননি। বরং আমি মনে করি ড. জাফর ইকবাল স্যারদের মতো যারা আসছিলেন, তারা কিন্তু আরো গভীরভাবে ইভিএম পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন। তবুও কিন্তু কেউ কেউ (রাজনৈতিক দলের) বিরোধীতা করছেন, কেউ কেউ পক্ষে আছেন, কেউ কেউ পক্ষে আছেন মোডিফিকেশন করার পরে। এভাবে আমাদের সংলাপগুলো শেষ হলো। এখন আমার মনে হয়, আসলে বিরোধীতার জন্য বিরোধীতা করছে, না সত্যি বিরোধীতা করছে। যদি তাদের ইচ্ছা থাকতো জিনিসটা চেক করার। তারা কিন্তু অবশ্যই সেই সুযোগটা নিতে পারতেন।
তিনি বলেন, আমাদের সমস্ত অডিও এবং ভিডিও রেকর্ড আছে। কে কি বলেছেন, সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করছি। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে সংসদে একটি আসনও নাই। কিন্তু তারা বলছেন আমরা ১৮ কোটি জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছি। এটিই রাজনীতি। রাজনৈতিকভাবে তারা অনেক কিছু বলতে পারেন। যন্ত্রের উপর আমাদের কোনো সন্দেহ নেই, আমার কোনো সন্দেহ নেই। যাদের আমাদের উপর আস্থা কম, সেই আস্থা অর্জনের জন্যই কিন্তু আমরা ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা অবশ্যই একদিন হয়তো সুফল দেখতে পারবো। আমরা কিন্তু এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি যে, কতটি আসনে ইভিএম ব্যবহার করবো। গত কয়েকমাসের পর্যবেক্ষণ এবং চার মাসে আমরা ১৭০টির বেশি নির্বাচন করেছি। যেগুলো আপনারা নিজেরাই পর্যবেক্ষণ করেছেন, বিশেষ করে কুমিল্লা এবং অন্যান্য পৌরসভা নির্বাচনের আমরা সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণ করেছি। আপনারা অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। একটি হাউজ থেকে চার-পাঁচজনও ছিলেন। আপনাদের কাছে যদি বলি নির্বাচন কেমন দেখলেন, তাহলে অবশ্যই আপনারা বলবেন ভালো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা যদি ইভিএম এবং ব্যালটের সঙ্গে তুলনা করি, তাহলে আপনারা নিজেরাও জানেন ব্যালটে কিভাবে ভোট দেওয়া যায়, আর এটাও জানেন ইভিএমে কিভাবে ভোট দেওয়া যায়। ইভিএমে কি আমার ভোট আরেকজন দিতে পারবে? অবশ্যই পারবে, তবে আমার হাতের আঙুলের ছাপ নেওয়ার পরে অন্য কেউ যদি ব্যালট ইউনিটে চাপ দেয়। সেটির নিরাপত্তার জন্য কিন্তু আমরা ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। সেটি নিরাপত্তার জন্য আমরা সাংবাদিকদের গোপন কক্ষ ছাড়া সব জায়গায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছি এবং সকল প্রকার দেশি বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দিয়েছি। ভবিষ্যতেও এগুলো অনুমতি দেওয়া হবে। এভাবে আমরা সুপারভিশনের মাধ্যমে সিসি ক্যামেরা, আপনারা (গণমাধ্যম), নির্বাচন পর্যবেক্ষক, এছাড়াও আমরা আরো অনেককিছু চিন্তা করছি যে, কিভাবে আরও স্বচ্ছ ও ট্রান্সপারেন্ট করতে পারি। বিএনসিসি, স্কাউটদেরও ভোটের সময় ব্যবহার করার চিন্তা আমাদের আছে। স্কাউটের ছেলেরা যখন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘুরবে, তখন যারা পথভ্রষ্ট ভোটার বা জোর করে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে, তারা শুধরে চলার চেষ্টা করবে। আরো প্রকেটশন আমরা নেবো। আমাদের সদিচ্ছার কোনো অভাব নেই।