রহমত ডেস্ক 07 June, 2022 04:29 PM
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মালিকপক্ষের গাফিলতি থাকলে তাদেরকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এ ঘটনা সন্দেহজনক। মালিকপক্ষও বলছে, এটি নাশকতা হতে পারে। এখানে বলা হচ্ছে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড। এটা কোনো বিস্ফোরক আইটেম নয়। এটি অনুমোদিত রপ্তানি পণ্য। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রপ্তানি করছে। এই ডিপো আইএসপিএস কোড (আন্তর্জাতিক জাহাজ, বন্দর সুবিধা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোড) অনুসরণ করেছে। যে কমপ্লায়েন্সগুলো ছিল, সবগুলো মেনেছে। সেখানে অগ্নিনির্বাপক যে ব্যবস্থা থাকা দরকার, সবই ছিল। তারপরও ঘটনাটা ঘটে গেল। মঙ্গলবার (৭ জুন) সচিবালয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন,আন্তর্জাতিক বিপদজনক পণ্য পরিবহনের যে নীতিমালা আছে, সেটাও সেখানে মানা হয়েছে। বলা হয়েছে, কনটেইনার ডিপোগুলোর মধ্যে বিএম কনটেইনার ডিপোর ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে ভালো। আমরা গতকাল পরিদর্শন করে যা দেখলাম, আগুনের যে চিত্রটা, হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডের যে কনটেইনারগুলো ছিল, কিছু কনটেইনারে আগুন ধরে গেছে, বিস্ফোরিত হয়ে গেছে। কীভাবে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, বিস্ফোরণ হয়ে গেল। এটা অস্বাভাবিক আগুন। একটা স্তর বাদ দিয়ে আরেকটা স্তরে আগুনটা ধরেছে। এটা একটা সন্দেহ হচ্ছে। মালিকপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটা নাশকতা কি না? এটা কোনো বিস্ফোরক দ্রব্য নয়। যেহেতু এটা বিস্ফোরক নয়, তাই তাদের এটা ডিক্লেয়ার করার কিছু নেই। ব্যাপারটা এ রকমই। আমরা যাওয়ার আগে এক ধরনের চিন্তা করেছিলাম। যাওয়ার পরে আমরা আরেক ধরনের ব্যবস্থা দেখলাম। অক্সিজেন নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সহায়তা করে। এই ধরনের কোনো একটা ঘটনা হয়তো ঘটেছে। সেজন্য এখানে বলা হচ্ছে, এটা নাশকতা কি না। এই মুহূর্তে এটা বলা খুব কঠিন, তদন্তের আগে।
তিনি বলেন, গতকাল একটা ব্যাপক গুজব ছড়ানো হয়েছে। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। এই উদ্বোধনের সঙ্গে এই ঘটনাটা জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উদ্বোধনের যে আয়োজন এতে যে অর্থটা খরচ হবে, সেটা ন্যূনতম। (উদ্বোধন অনুষ্ঠান না করে) এই অর্থ দিয়ে আগুন মোকাবিলায় হেলিকপ্টার কেনা হবে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছে। মিলিয়ন ডলার এখানে ব্যয়, সেটার সঙ্গে এটা খুবই যৎসামান্য। এটা পপুলার একটি গুজব। এই যে মিলিয়ে দেওয়া হলো, পাশাপাশি নাশকতার ধারণা করা হচ্ছে। এটাতে খুবই যোগসূত্র পাওয়া যায়। আমি যেটা দেখেছি, আপনি যদি প্র্যাকটিক্যালি যান, আপনারও এমনটা হতে পারে। সবকিছু তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। যেহেতু আমাদের আশঙ্কাটা এখানে এসেছে। যারা তদন্ত করছেন, তারা হয়ত এই বিষয়টাও আমলে নেবেন। বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে, সেই এগিয়ে যাওয়ায় অনেকে ঈর্ষান্বিত। সেই জায়গাগুলোতে অনেকে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেটাও একটা ব্যাপার। আমেরিকার মতো শতভাগ সিকিউরড জায়গায় টুইন টাওয়ারে কিন্তু হামলা করা হয়েছিল। ইংল্যান্ডে বাসা থেকে বের হলে ৩০-৪০টা ক্যামেরার মধ্যে আপনি চলে যাবেন। সেখানেও হামলা হয়েছে। নাশকতা যারা করে, তারা তো সেভাবেই করে।
তিনি আরো বলেন, আমার ফোন দুইবার হ্যাক হয়ে গেছে, শুধু বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার ক্যাম্পেইনিং করার জন্য। তো এটা কি নাশকতা না? এটাওতো নাশকতা। কীভাবে হয়েছে আমিও তো জানি না। দেখা যাচ্ছে আমার আইডি হ্যাকিং করে পাকিস্তানি এক লোকের নামে চালানো হচ্ছে, একজন হিন্দু মহিলার নাম দিয়ে। আমার এটি উদ্ধার করতে প্রায় ২০-৩০ দিন লেগেছে। এটা তো বেশিদিন আগের ঘটনা না, ২০১৯ সালের ঘটনা। কাজেই যারা নাশকতা করবে, যারা বেড গেইম প্লে করে তারা আরও বেশি স্কিলড। তারা আরও বেশি মেধাবী। তদন্তের মধ্যে বেরিয়ে আসবে। যদি মালিকপক্ষ তদন্তের মধ্যে আসে, গাফিলতি আছে, ডেফিনেটলি আইনের আওতায় আসবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। এটার মালিক সেখানকার আওয়ামী লীগের একজন নেতা। অনেকেই বলছেন তাকে ছাড় দেওয়ার একটা ব্যবস্থা হতে পারে। এখানে রাজনীতির সঙ্গে তো কোনো সম্পর্ক নেই। সেখানে তো দেখলাম জামায়াতের আমিরও গেছেন।