মূল পাতা আন্তর্জাতিক ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক রাখলেই মৃত্যুদণ্ড, ইরাকে কঠোর আইন পাস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 27 May, 2022 12:03 PM
ইরাকের পার্লামেন্টে সর্বসম্মতিক্রমে এমন একটি আইন পাস করা হয়েছে যার ফলে দেশটির কোনো সরকার কোনোদিন ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে না। ওই আইনে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনকে ‘অপরাধ’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
নতুন আইন অনুযায়ী, এখন থেকে কোনো ইরাকি নাগরিক ইসরায়েলে ভ্রমণ বা ইসরায়েলি কোনো নাগরিকের সাথে সম্পর্ক বা যোগাযোগ রাখতে পারবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও কোনো ইসরায়েলির সাথে যোগাযোগ রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই আইনের মাধ্যমে। আইন ভঙ্গকারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। খবর আল জাজিরার।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) স্পিকার মোহাম্মাদ আল-হালবুসির সভাপতিত্বে ইরাকি পার্লামেন্টের অধিবেশনে ‘ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন নিষিদ্ধ’ শিরোনামে একটি বিল উত্থাপন করা হয়। বিলটির উল্লেখযোগ্য একটি ধারা হচ্ছে, ইসরাইলের সঙ্গে রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও বিজ্ঞানগত সহযোগিতা নিষিদ্ধ। বিলটি পাস হওয়ার পর ইরাকি সংসদ সদস্যরা পার্লামেন্টের ভেতরে ইসরাইল বিরোধী স্লোগান দেন।
ইরাকি পার্লামেন্টের ৩২৯ আসনের মধ্যে ২৭৫টি ভোট পেয়ে এই আইন পাস হয়। সদ্য পাস হওয়া আইনে বলা হয়েছে, দেশের ভেতর ও দেশের বাইরে যে সকল ইরাকি এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তারা আছেন, দক্ষিণ কুর্দিস্তান অঞ্চলে যারা আছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি কোম্পানি, গণমাধ্যম, বিদেশি প্রতিষ্ঠান এবং এর কর্মীদের ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়া, ইসরাইলে ভ্রমণ করা এবং স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করার ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। যে সকল ইরাকি ইসরাইলে ভ্রমণ করবে তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হবে। যারা ইসরাইলি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অথবা সাংস্কৃতিক সম্পর্ক তৈরি, এমনকি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করবে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে।
মূলত, ভবিষ্যতে কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দল যাতে ইসরায়েলের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে দেশের জন্য ঝুঁকি না বাড়াতে পারে সেই লক্ষ্যেই এই আইন পাস করা হয়েছে। তবে এই আইনের কারণে বিপাকে পড়েছে ইসরায়েলে কর্মরত একাধিক ইরাকি কোম্পানি ও শ্রমিক। এ আইনের আওতায় তারাও অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এখনও ইসরায়েলে কাজ চালিয়ে যাওয়া মানে আইন লঙ্ঘন। আর আইন ভঙ্গকারীদের কঠোর শাস্তি ঘোষণার পর সেখান থেকে সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে একাধিক কোম্পানিকে।
ইরাকি পার্লামেন্টে এই আইনটি প্রস্তাব করে প্রভাবশালী শিয়া ধর্মগুরু মুকতাদা আল-সদর। গত অক্টোবরের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিরোধিতা করে ইরাকি পার্লামেন্টে বেশি আসন জিতেছিল তার দল।