রহমত ডেস্ক 17 May, 2022 07:51 PM
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ইসলাম ও শিক্ষা নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। বিশেষ করে কওমী মাদরাসার বিরুদ্ধে একটি নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠী সিন্ডিকেটভিত্তিক অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। কিন্তু তারা জানে না, ওলামায়ে কেরামের সাথে সরাসরি মহান রব্বুল আলামিনের সম্পর্ক রয়েছে। ঐ গোষ্ঠী চাইলেই এ শিক্ষা ব্যবস্থার শিকড় উপড়ে ফেলতে পারবে না। আজ (১৭ মে) মঙ্গলবার বিকালে রাজবাড়ী জেলার পাংশা আজিজপুর রশিদীয়া মাদরাসার বার্ষিক সবক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবক প্রদান শেষে নসিহতে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, যতদিন ইলমে নববীর এ শিক্ষা কেন্দ্রগুলো চালু থাকবে, ততদিন পৃথিবী ধ্বংস হবে না। যতদিন ওলামায়ে কেরাম ও ওয়াজ নসিহত আছে, ততদিন পৃথিবীজুড়ে হেদায়েতের হাওয়া চালু থাকবে, হেদায়েত চালু না থাকলে দুনিয়া পাপাচারে ভরে যাবে। আর তখই ধ্বংস অনিবার্য। তাদের কথিত শ্বেতপত্রে প্রধানত লক্ষ বানানো হয়েছে জনসম্পৃক্ত ওলামাদেরকে। যারা দেশব্যাপী ওয়াজ-মাহফিলের মাধ্যমে মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বান করেন। ওয়াজ হলো, জনসাধারণের চরিত্র ও ধারণ ক্ষমতা অনুসারে ইসলামের নির্দেশনা এবং পরকালের শাস্তি ও প্রাপ্তি নিয়ে এক ধরনের আলোচনা। ওয়াজ কোন একাডেমিক আলোচনা নয়।
তিনি বলেন, ওয়াজ বাংলাদেশের হাজার বছরের সংস্কৃতি। এদেশে ইসলাম এসেছে সুফি, দরবেশ ও পীর-মাশায়েখদের মাধ্যমে। তারা প্রেম-ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করেছেন। সেই তখন থেকেই বাংলার গ্রামে-গঞ্জে, হাটে-বাজারে, পাড়া-মহল্লায় প্রতি বছর অন্তত একবার সম্মিলিতভাবে ওয়াজ মাহফিল আয়োজন করা হয়। বাংলার দীর্ঘদিনের সংস্কৃতি এটা। এটা বাঙালি মুসলমানের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্য গ্রামে-গঞ্জে ঐক্য সৃষ্টি করেছে, সমাজবদ্ধতা তৈরি করেছে। এলাকার তরুণদের মাঝে পারস্পরিক বোঝাপড়া তৈরি করছে। একই সাথে ওয়াজের মাধ্যমে সমাজে পরকীয়া, ধর্ষণ, নারীবিদ্বেষ, নারী নির্যাতন, দুর্নীতি ইত্যাদি অপরাধের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠছে। আজকে যারা এই ওয়াজের বিরুদ্ধে বানোয়াট শ্বেতপত্র নাটক করছে, তারা আদতে মুসলিম বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধ শক্তি। এরা বাঙালি মুসলমানের স্বতঃস্ফূর্ত সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বাইরে থেকে আমদানিকৃত সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জাতির সূর্য সন্তান ওলামায়ে কেরামদের ধর্মব্যবসায়ী বলে নাস্তিক মুরতাদ গোষ্ঠী ওলামাদের অসম্মান করতে চায়। দেশবিরোধী ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, যাদের চরিত্রের ঠিক নেই, যারা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িতের কারণে বহিস্কৃত হয়েছে, তারা ওলামাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে। তিনি ঐ সকল কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। ওলামায়ে কেরাম এদেশে ভেসে আসে নাই। ওলামাদের সাথে সম্পর্ক মাটি ও মানুষের। কাজেই সস্তা তালিকা করে, তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের নামে অপমান অপদস্ত সহ্য করা হবে না। দেশপ্রেমিক ঈমানদার জনতা প্রয়োজনে জবীন ও রক্ত দিতে প্রস্তুত রয়েছে।