রহমত ডেস্ক 15 May, 2022 02:00 PM
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সি এম শফি সামি বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি প্রভাব থাকলেও তা কাউকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা বা ক্ষমতাচ্যুত করার মতো নয়। বাংলাদেশের অবস্থা এখনো শ্রীলঙ্কার মতো হয়নি। তবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বর্তমান অবস্থা থেকে বাংলাদেশের অনেক শিক্ষণীয় রয়েছে। তাই বাংলাদেশে দ্বন্দ্ব-সংঘাতমূলক পরিস্থিতি পরিহার করে রাজনৈতিক সমঝোতায় আসা জরুরি।
শনিবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় ঢাকার এফডিসিতে ‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’ আয়োজিত পাকিস্তানের ইমরান খানের সরকার পতনের কারণ নিয়ে এক ছায়া সংসদে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ইউসিবি পাবলিক পাবলিক শিরোনামে এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে গ্রীন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক শাকিলা জেসমিন ও সাংবাদিক আঙ্গুর নাহার মন্টি। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।
শফি সামি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত থাকলেও পাকিস্তানে ইমরান খানের সরকার পতনের জন্য সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিরোধ, শাসনব্যবস্থার দুর্বলতা এবং নিজ জোটের অনৈক্যই অনেকাংশে দায়ী। প্রথমবারের মতো সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট শক্ত সাংবিধানিক অবস্থান গ্রহণ করেছেন। নবগঠিত শাহবাজ সরকারের অবস্থাও অত্যন্ত নাজুক। পিএমএলএন এবং পিপিপি এই দুটি প্রভাবশালী জোটের বর্তমান ঐক্য কত দিন থাকবে, তা দেখার বিষয়। এই সরকারের দেশ পরিচালনার সক্ষমতা ও জোটবদ্ধতার স্থায়িত্বের ওপর নির্ভর করছে ইমরান খানের ভবিষ্যৎ রাজনীতির সাফল্য। তবে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা রয়েছে এবং তিনি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখেন।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, পাকিস্তানের জনগণের জন্য সবচেয়ে বড় লজ্জার বিষয় হচ্ছে তাদের সরকারগুলোর গ্রহণযোগ্যতা জনগণের কাছে যত ভালোই হোক না কেন, সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ সমর্থন ছাড়া তারা ক্ষমতায় থাকতে পারে না। পাকিস্তানের ৭৫ বছরের ইতিহাসে ২৫ বছরই সামরিক বাহিনীর শাসন ছিল। বাকি ৫০ বছর বেসামারিক সরকারে নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে সামরিক বাহিনী। আসলে পাকিস্তানের গণতন্ত্র কখনোই নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেনি। অদৃশ্য ক্র্যাচের ওপর নির্ভর করে পাকিস্তানের সরকার পরিচালিত হচ্ছে। যখনই এই ক্র্যাচটি সরিয়ে নেওয়া হয় তখনই পাকিস্তানের গণতন্ত্র চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে।