রহমত ডেস্ক 23 April, 2022 07:39 AM
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দোকানি ও কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের তাণ্ডবের ঘটনায় শতাধিক ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ক্যামেরা, ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহের পর বিশ্লেষণ চলছে। পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, সংঘর্ষের উৎপত্তি থেকে শুরু করে উস্কানিদাতাদের শনাক্তের চেষ্টা করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
ইতোমধ্যে অর্ধশত ব্যক্তির নাম-পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে গোয়েন্দা নজরদারি চলছে। যেকোনও সময় এসব ব্যক্তিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সংঘর্ষের ঘটনায় মোট চারটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলা দুটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মামলার তদন্তের ব্যাপারে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। সার্বিক ঘটনায় তৃতীয় কোনও পক্ষ সুযোগ নিয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা যায়, দুটি খাবারের দোকানের কর্মচারীদের টেবিল বসানোকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এরপর দুই পক্ষই বিষয়টি নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তার মন্তব্য, প্রথম দিকে শক্তি প্রদর্শন ও ইগোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে এর নেপথ্যে রাজনৈতিক ইন্ধন যুক্ত হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা সুক্ষ্মভাবে ঘটনাটি পুরো শহরে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার ফলে সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি।
পুলিশের ওই কর্মকর্তার দাবি, ঘটনার দ্বিতীয় দিনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যেতে চায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিকল্পনা করে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আহ্বান জানায়। একইসঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী নেতাদেরও পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত দোকান মালিক-কর্মচারীদের সরিয়ে নিতে বলা হয়। তবুও একটি পক্ষ বারবার সংঘর্ষ চলমান রাখার চেষ্টা করেছিল।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষ চলার পর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু পরদিন মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে উভয় পক্ষের মধ্যে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী।