রহমত ডেস্ক 01 March, 2022 11:19 PM
কক্সবাজারের চকরিয়ায় দেশের বহুল আলোচিত সড়ক দুর্ঘটনায় পিকআপচাপায় নিহত ছয় ভাইয়ের পরিবারের স্বজনদের দেখতে ও সমবেদনা জানাতে গিয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন সড়ক দুর্ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। এ ঘটনা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং মর্মস্পর্শী। সরকারের পক্ষ থেকে হাজার কোটি টাকা অনুদান দিলেও ছয় সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না। স্বজন হারানোর বেদনা কি জিনিস তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন এবং বুঝেন। সেজন্য তিনি এ ঘটনার পর থেকে প্রতি মুহূর্তে খবর নিয়েছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এসেছি। সরকার ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য জমিসহ বাড়ির ব্যবস্থা করেছেন। দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া মৃত সুরেশ চন্দ্র সুশীলের একমাত্র সন্তান প্লাবন সুশীলসহ নিহত ছয়জনের স্ত্রীদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির ব্যবস্থা করবেন বলেও আশ্বাস দেন তিনি।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাটস্থ হাসিনা পাড়ার প্রয়াত সুরেশ চন্দ্র সুশীলের বাড়িতে আসেন। গাড়িচাপায় নিহত ছয় ভাইয়ের মা-স্ত্রী-সন্তানদের খোঁজ-খবর নেন এবং গভীর সমবেদনা জানান। পরে তিনি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত আট পরিবারের মাঝে মোট ৪ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন। এ সময় কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলমের স্ত্রী শাহেদা জাফরের পক্ষ থেকেও নগদ এক লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছয় সন্তান হারানো হতভাগ্য মা মৃণালিনী বালা সুশীল মানু মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রাখেন, আমরা কি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার পাব। আমাদের কিছুই চাওয়ার নেই। আমি জীবিত থাকতে আমার ছয় সন্তানের হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই। প্রতিমন্ত্রী মো.ফরিদুল হক খান বলেন, ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘাতক পিকআপ জব্দ করেছে। পাশাপাশি গাড়ির মালিক ও চালককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। আশাকরি জঘন্যতম এ ঘটনার সুষ্ঠু এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে।
চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের কাছে চেক হস্তান্তর উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ানের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রাহাত উজ জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, আ‘লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার-১ আসনের এমপি জাফর আলম, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত পাল, সাবেক সচিব ও ট্রাস্টি অশোক মাধব রায়, কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ, কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও সাবেক জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়াসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।