রহমত ডেস্ক 23 February, 2022 04:27 PM
সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল সীমিত করার চিন্তা করছে বিআইডব্লিউটিএ। মাত্র দুটি জাহাজ চললে কয়েক হাজার পর্যটক বঞ্চিত হবেন। যার প্রভাব পড়বে পর্যটন শিল্পে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ব্যবসা। জাহাজ চলাচল বন্ধ হলেও বিকল্প পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের নৌকায় সেন্টমার্টিন যাবেন পর্যটকরা।কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে পর্যটক সীমিত করলে পর্যটন শিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানিয়েছে ‘সি ক্রুজ অপারেটির ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-স্কোয়াব। আজ (২৩ ফেব্রুয়ারি) বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কক্সবাজার শহরের লাবণী পয়েন্টে একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন স্কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর। এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, স্কোয়াবের সভাপতি তোফায়েল আহমদ, কেয়ারীর প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী ও টুয়াকের প্রতিনিধি এস এ কাজল।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, যে উদ্দেশ্যে জাহাজ চলাচল সীমিত করা হচ্ছে তার কোনও সুফল আসবে না। বরং ঝুঁকি বাড়বে পর্যটন খাতে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনার সঙ্গে আমরা একমত। এসব দফা বাস্তবায়নে মাঠে আছি। কিন্তু নানা অজুহাতে জাহাজ চলাচল এবং পর্যটক সীমিত করা হলে হোটেল ব্যবসাসহ পর্যটন খাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে। আমরা জানতে পেরেছি, সেন্টমার্টিনে ভবিষ্যতে দুটি জাহাজ চলবে এবং এক হাজার ২৫০ জন পর্যটক যাতায়াতের সুযোগ পাবেন। স্বল্প সংখ্যক পর্যটক ব্যবস্থাপনায় দ্বীপের ১৮৮টি আবাসিক হোটেলে নতুন সংকট সৃষ্টি হবে। সেন্টমার্টিনে অন্তত পাঁচ মানুষ জীবিকা নির্বাহ করছেন। পর্যটক সীমিত করলে তাদের জীবিকাও হুমকিতে পড়বে। সেন্টমার্টিন নিয়ে আমাদের সুপারিশ হলো, বর্তমানে চলাচলরত ১০টি জাহাজে সর্বোচ্চ তিন হাজার পর্যটক যাতায়াত করেন। দ্বীপের আবাসিক হোটেলগুলোতে কক্ষ আছে এক হাজার ৪০০টি। প্রতি কক্ষে একজন করে দৈনিক এক হাজার ৪০০ পর্যটক সেন্টমার্টিনে রাত্রিযাপন করুক। বাকি এক হাজার ৬০০ পর্যটক গন্তব্যে ফিরে আসুক। গত ১০ বছর ধরে এই প্রক্রিয়ায় পর্যটকরা যাতায়াত করছেন। সরকারি নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকুক। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি সেন্টমার্টিন বিষয়ে নীতিনির্ধারণী সভা হচ্ছে। সেখানে সেন্টমার্টিন বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গৃহীত হচ্ছে জানতে পেরেছি। আমাদের বিশেষ অনুরোধ, ওই সভায় আমাদের দাবিসমূহ যেন গৃহীত হয়। ১০টি জাহাজে দৈনিক তিন হাজার পর্যটক পারাপার করতে চাই আমরা।
এদিকে, সেন্টমার্টিনে সীমিত আকারে জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ এবং হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা দীর্ঘ দুই দশকের বেশি সময় ধরে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের অফুরান সম্ভাবনার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সুরক্ষায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব থেকে দ্বীপকে রক্ষার জন্য নানা কর্মসূচি পালন করছি। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাহাজে পর্যটক ওঠানামা এবং পারাপার করে আসছি। সেন্টমার্টিনে স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর থাকায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি। কারও করোনা শনাক্ত হয়নি। সেন্টমার্টিনকে করোনামুক্ত রাখতে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: চট্টগ্রাম কক্সবাজার কক্সবাজার সদর