| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘ইয়েলো জোনে রংপুর, শনাক্তের হার ১০.৮৪ শতাংশ’


‘ইয়েলো জোনে রংপুর, শনাক্তের হার ১০.৮৪ শতাংশ’


রহমত ডেস্ক     13 January, 2022     08:12 PM    


বৈশ্বিক মহামারী মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মধ্যে রংপুরকে ইয়েলো জোন (মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ) ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। তবে স্থানীয়দের মধ্যে এখনও এই ঘোষণার কোনো প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বলা হলেও রংপুরে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেই কোনো সচেতনতা। এমনকি করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে ঘোষিত বিধিনিষেধ কার্যকর করতে নেই কোনো তৎপরতা। জনসমাগম অধ্যুষিত এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা এবং মাস্ক ব্যবহারেও উপেক্ষিত হচ্ছে সরকারের নির্দেশনা। যদিও সংক্রমণ প্রতিরোধে ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোকে সাবধানতার সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯ এর নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব এবং দেশে এ রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সার্বিক কাৰ্যাবলী/চলাচলে নিম্নোক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো। বৃহস্পতিবার থেকে বিধিনিষেধ কার্যকর ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিত করতে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও এখন পর্যন্ত রংপুরে তেমন কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। হাট-বাজার থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁ, অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবহনে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কার্যক্রম চলছে না। সাধারণ মানুষ বলছে, প্রচার-প্রচারণা কম হওয়ায় অনেকেই সরকারের নতুন বিধিনিষেধ সম্পর্কে অবগত নন।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় রংপুরেও লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে শনাক্তের হার। গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে নতুন করে ৯ জনসহ বিভাগের আট জেলায় ১৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে ১৬৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ। করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত রংপুর বিভাগে ৩ লাখ ৯ হাজার ২৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ হাজার ৮৭৫ জন করোনা পজিটিভ হয়েছে। এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ২৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রংপুর বিভাগে সবচেয়ে বেশি শনাক্ত ও মৃত্যু হয়েছে দিনাজপুর জেলায়। এরপরই রংপুর জেলা রয়েছে। সবেচেয়ে কম শনাক্ত হয়েছে লালমনিরহাটে আর মৃত্যু গাইবান্ধা জেলায়।

রংপুর বিভাগের সীমান্তঘেঁষা হওয়ায় এবং কয়েকটি স্থলবন্দর থাকায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে সীমান্তের জেলাগুলো। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বন্দরগুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ থাকলেও প্রতিদিন হাজারেরও বেশি পণ্যবাহী যান চলাচল করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বুড়িমারী, হিলি এবং বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ২৪ জন প্রবেশ করেছেন। ঢাকা ও রাঙ্গামাটি জেলা সংক্রমণের রেড জোন অর্থাৎ উচ্চঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়া হলুদ জোন বা মধ্যম ঝুঁকির তালিকায় রংপুর, দিনাজপুর ও লালমনিরহাটসহ ৬ জেলা রয়েছে। এছাড়া কম ঝুঁকি অর্থাৎ সবুজ জোনে রয়েছে দেশের ৫৪ জেলা।

রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে রংপুরকে ইয়েলো জোন ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানাতে সরকারি নির্দেশনা অনুসরণে সবাইকে আহ্বান করছি। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও মাইকিং করে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে জেলার প্রতিটি উপজেলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। রংপুর জেলায় করোনা সংক্রমণ শুরুর প্রথম ঢেউ থেকে এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৬১২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আক্রান্ত ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ জেলায় ৭৪ হাজার ৬৬৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।