| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন হাটহাজারী জামিয়ার মাহফিলে পাগড়ী পেলেন ২৫০০ তরুণ আলেম


হাটহাজারী জামিয়ার মাহফিলে পাগড়ী পেলেন ২৫০০ তরুণ আলেম


রহমত ডেস্ক     07 January, 2022     08:20 PM    


এশিয়ার অন্যতম ও প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে হাটহাজারী জামিয়া থেকে গত শিক্ষাবর্ষে দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) উত্তীর্ণ প্রায় ২৫০০ তরুণ আলেমকে প্রতিষ্ঠানের নাম ও মনোগ্রাম খচিত বিশেষ সম্মানসূচক পাগড়ী প্রদান করা হয়েছে। তাদের মাথায় পাগড়ি তুলে দেনহাটহাজারী জামিয়ার মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস মাওলানা নূর আহমদ, শায়খুল হাদীস মাওলানা শেখ আহমদ, শায়খে সানী হাফেজ মাওলানা শোয়াইব, মুঈনে মুহতামিম মুফতি জসিমুদ্দীন, শিক্ষা পরিচালক মাওলানা কবীর আহমদ, সহকারী শিক্ষা পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ ওমর কাসেমী, মুহাদ্দিস মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, মাওলানা ফোরকান আহমদ, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী প্রমুখ। আজ (৭ জানুয়ারী) শুক্রবার জামিয়ার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলন লক্ষাধিক মুসল্লীর অংশগ্রহণে আখেরী মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়েছে।

সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে হাটহাজারী জামিয়ার মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া বলেছেন, বর্তমানে ঈমান, আমল ও ধর্মীয় অনুশাসন পালনে সাধারণ শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে গাফলতি দেখা যাচ্ছে। ইসলাম থেকে দূরে সরে পড়ার কারণেই মুসলমানগণ নানা দুর্দশা ও ঘাতপ্রতিঘাতের শিকার হচ্ছে। সঠিকভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মাধ্যমেই কেবল এই বিপদাপদ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর সাহায্য আশা করা যায়। ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি, ইনসাফ, সততা ও সহাবস্থানের ধর্ম। পরিপূর্ণরূপে ইসলাম মেনে চললে আখেরাতের চিরস্থায়ী জীবনের সাথে সাথে দুনিয়াবী জীবনও শান্তি এবং সমৃদ্ধিময় হবে। এ জন্য সবার আগে আমাদের ঈমান- আক্বিদা বস্তুনিষ্ঠ ও দৃঢ় করতে হবে। তারপর যথারীতি নামায কায়েম এবং এরপর রোযা, হজ, যাকাত’সহ অন্যান্য বিধানসমূহ মেনে চলতে হবে। সুন্নাত অনুযায়ী জীবন সাজাতে হবে। যেনা-ব্যভিচার, মিথ্যা, সুদ-ঘুষ, দুর্নীতি, অন্যের হক আত্মসাত, মারামারি-হানাহানি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকতে হবে।  ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোন স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোন হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না এবং শান্তি ও ইনসাফ নিশ্চিত হবে।

হাটহাজারী জামিয়ার মুঈনে মুহতামিম মুফতি জসিমুদ্দীন, মুহাদ্দিস মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আনোয়ার শাহ আযহারী ও ড. মাওলানা নূরুল আবছার আযহারীর যৌথ সঞ্চালনায় মাহফিলে বক্তব্য রেখেছেন, বাবুনগর জামিয়ার মুহতামিম আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, জামিয়া দারুল মাআরিফের মুহতামিম মাওলানা সুলতান যাওক্ব নদভী হাটহাজারী জামিয়ার শায়খুল হাদীস মাওলানা শেখ আহমদ, আল্লামা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী, জামিয়া পটিয়ার মুহতামিম মুফতি আব্দুল হালীম বুখারী, নানুপুর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, জামিয়া দারুল আরকামের  মুহতামিম মাওলানা সাজিদুর রহমান, জামিয়া পটিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আহমাদুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান সিরাজী,  নাজিরহাট বড় মাদরাসার মুহতামিম মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমী, মেখল হামিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা উসমান ফয়জী, মুজাহিরুল উলূম মাদরাসা মুহতামিম মাওলানা লোকমান, রাঙ্গুনিয়া দারুল উলূম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সা’দাত, জিরি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা খুবাইব, ফতেহপুর মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মাহমুদুল হাসান, জিরি মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা  ড. আফম খালেদ হোসেন, মেখল মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা ইসমাঈল খান, দারুল হেদায়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, হাটহাজারী জমিয়ার মুহাদ্দিস মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, মাওলানা ফোরকান আহমদ, সিনিয়র শিক্ষক মুফতি হুমায়ুন কবীর, মাওলানা ড. নূরুল আবছার আল-আযহারী প্রমুখ।

উল্লেখ্য, হাটহাজারী জামিয়ার বার্ষিক মাহফিলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার উলামায়ে কেরাম ছাড়াও লক্ষাধিক মুসল্লী অংশগ্রহণ করেন। বাদ ফজর থেকেই বয়ান শুরু হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই পুরো মাহফিল কানায় কানায় পূর্ণ হযে যায়। মাহফিলের দিন শুক্রবার প্রধান মসজিদ জামে বায়তুল কারীমে জুমার খুতবা প্রদান ও ইমামতি করেন মুফতি জসিমুদ্দীন এবং জামে বায়তুল আতিকে জুমার খুতবা ও ইমামতি করেন মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী। বাদ জুমা হাটহাজারী জামিয়ার মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া উপস্থিত লক্ষাধিক উলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতার উদ্দেশ্যে বিশেষ বয়ান করেন। হাটহাজারী জামিয়ার বার্ষিক মাহফিল উপলক্ষ্যে শিক্ষা ভবন, ছাত্রাবাস, বিশাল প্যান্ডেল এবং চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কসহ সমগ্র হাটহাজারী এলাকা হাজার হাজার উলামা-মাশায়েখ ও তরুণ আলেমদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।