মূল পাতা আন্তর্জাতিক বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভারত অবদান রাখছে : রাজনাথ সিং
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 12 December, 2021 07:39 PM
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বরাবরের মতো পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ বলে দাবি করে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারত জয়ী হয়েছিল। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভারত অবদান রাখছে এবং আজ আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে দ্রুত অগ্রসর হয়েছে; যা বাকি বিশ্বের জন্য অনুপ্রেরণা। ১৯৭১ সালের পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধের ‘স্বর্ণিম বিজয় বর্ষ’র ‘বিজয় পর্ব’ উদযাপন করতে আজ আমরা সবাই ইন্ডিয়া গেটে সমবেত হয়েছি। এই উৎসবটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর গৌরবময় বিজয়কে স্মরণ করিয়ে দেয়; যা দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস ও ভূগোল—উভয়ই বদলে দিয়েছে।
আজ (১২ ডিসেম্বর) রবিবার রাজধানী নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া গেটে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে জয় এবং ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বের ৫০ বছর স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ব্যবহৃত প্রধান প্রধান অস্ত্র এবং অন্যান্য যুদ্ধ সরঞ্জামও সেখানে প্রদর্শিত হচ্ছে। আগামীকাল সোমবার ‘স্বর্ণিম বিজয় পর্ব’ উদযাপনের সমাপনী অনুষ্ঠিত হবে। সেই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশির প্রতিনিধিদের পাশাপাশি রাজনাথ সিং ও অন্যান্যরা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। অতীতেও দেশটির অনেক নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধ এবং সেই যুদ্ধে ভারত জয়ী হয়েছিল বলে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন।
রাজনাথ সিং বলেন, বিজয় পর্ব উদযাপনের এই অনুষ্ঠান জমকালোভাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেশের প্রথম প্রতিরক্ষাপ্রধান (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়াতের অকাল মৃত্যুর পর সাদামাটাভাবে আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই উপলক্ষে আমি তাকেও স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আজকের দিনে আমি ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রত্যেক সৈন্যের সাহসিকতা, বীরত্ব এবং আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা জানাই। যার কারণে ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারত জয়ী হয়। ভারত সবসময় সেই সব সাহসী হৃদয়ের আত্মত্যাগকারী সৈন্যদের কাছে ঋণী থাকবে। মাঝে মাঝে আমি এই ভেবে বিস্মিত হয়ে যাই যে, আমাদের বাঙালি বোন-ভাইদের কী দোষ ছিল? নিজেদের অধিকারের দাবি দোষের? তাদের শিল্প, সংস্কৃতি এবং ভাষা রক্ষা করতে চাওয়াটা দোষের? রাজনীতি এবং শাসন ব্যবস্থায় নিজেদের প্রতিনিধিত্বের ব্যাপারে কথা বলাটা দোষের?
তিনি আরো বলেন, আমাদের বাঙালি বোন-ভাইদের ওপর অবিচার এবং নৃশংসতা কোনো না কোনোভাবে সমগ্র মানবতার জন্য হুমকি ছিল। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের রাজধর্ম, রাষ্ট্রধর্ম এবং সামরিক ধর্মই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে সেই অন্যায় ও শোষণ থেকে মুক্ত করতে সাহায্য করেছিল। এই যুদ্ধ আমাদের নৈতিকতা, আমাদের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য এবং ন্যায্যতার এক সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ। ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে যে, যুদ্ধে অন্য দেশকে পরাজিত করার পর আমাদের মতো একটি দেশ তার ওপর আধিপত্য বিস্তার করেনি। বরং সেই দেশের রাজনৈতিক প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে।