মূল পাতা মুসলিম বিশ্ব কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী প্রবাদপ্রতিম নেতা সৈয়দ আলি গিলানির ইন্তেকাল
রহমতটোয়েন্টিফোর ডেস্ক 02 September, 2021 04:42 PM
কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী নেতা সৈয়দ আলি গিলানি তার শ্রীনগরের বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন। খবর বিবিসির।
কাশ্মীরে ভারতীয় দুঃশাসনের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় প্রচারণা চালানো এই নেতা গত ১১ বছরের অধিকাংশ সময়ই গৃহবন্দি ছিলেন। গিলানির মৃত্যুর পর উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কায় শ্রীনগরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি বাড়িয়েছে ভারত প্রশাসন। গিলানির বাড়ির আশেপাশের রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে প্রতিরোধ তৈরি করেছে তারা।
বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া খবরে বলা হচ্ছে, সেখানে ইন্টারনেট সেবা এবং ফোন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শহরে কারফিউ দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারত শাসিত কাশ্মীরে এই ধরনের পদক্ষেপ এর আগেও নেওয়া হয়েছে। পুলিশ এই ধরণের পদক্ষেপকে সতর্কতামূলক হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকে। তাদের ভাষ্যমতে, অনলাইনে গুজব ছড়িয়ে সহিংসতায় উস্কানি দেওয়া যেন সম্ভব না হয়, তা নিশ্চিত করতে এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়ে থাকে।
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে গত ৩০ বছর ধরে সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। ভারতের প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী বিচ্ছিন্নতাবাদী আগ্রাসন বাড়ার কারণেই এই সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তবে অনেক কাশ্মীরিই মনে করেন ভারতের শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করায় কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী মানুষের বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রশাসন আগ্রাসন চালাচ্ছে।
তার মৃত্যুতে ভারতের কাশ্মীরি নেতাদের পাশাপাশি পাকিস্তানি রাজনীতিবিদরাও শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার টুইটারে গিলানিকে 'মুক্তিযোদ্ধা' হিসেবে আখ্যা দিয়ে শোক প্রকাশ করেছেন এবং বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিক শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় 'কাশ্মীরি প্রতিরোধের প্রবাদপ্রতিম নেতা' গিলানির মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে গিলানির জানাযা ও দাফনকাফন সম্পন্ন হয়েছে। এতে শুধুমাত্র পরিবারের সদস্যদের যোগ দিতে অনুমতি দেয় কাশ্মীরের পুলিশ।
গিলানি ১৫ বছরের বেশি সময় আইন প্রণেতা হিসেবে কাজ করেছেন। ভারত-শাসিত কাশ্মীরের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল জামাত-এ-ইসলামির সাথে সংযুক্ত ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
গিলানি তার জীবনের দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। ১৯৬২ সালে পাকিস্তানের সাথে সংযুক্ত হওয়ার প্রচারণা চালানো শুরু করার পর প্রায় ১০ বছর কারাগারে ছিলেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা করার বিরোধী হিসেবে খ্যাতি ছিল গিলানির। কাশ্মীর ভারতের শাসনের অধীনে থাকবে কী না, তা নির্ধারণ করতে কোনো ধরনের আলোচনার আগে গণভোট আয়োজনের পক্ষপাতি ছিলেন তিনি।
২০২০ সালে গিলানিকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব 'নিশান-ই-পাকিস্তান' দেওয়া হয়।
/জেআর/