রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫ | ২ চৈত্র ১৪৩১ |
               

মূল পাতা জাতীয় শরীয়া আইনে ধর্ষকদের বিচার বাস্তবায়নের দাবি খেলাফত আন্দোলনের


শরীয়া আইনে ধর্ষকদের বিচার বাস্তবায়নের দাবি খেলাফত আন্দোলনের


রহমত নিউজ     15 March, 2025     11:52 AM    


প্রচলিত আইনে বিচার বিলম্ব হওয়ার কারণে ধর্ষকসহ জঘন্য অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে এবং অপরাধ করতে উৎসাহিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করে সরকারের নিকট পৃথক শরীয়া আদালত স্থাপন করে শরীয়া আইনে ধর্ষকদের বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। 

শুক্রবার (১৪ মার্চ) বিকাল সাড়ে তিনটায় রাজধানীর পল্টনস্থ খানা বাসমতি রেস্তোরায় খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে “অপরাধ প্রবণতা নির্মূলে কুরআনের নির্দেশনা” শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে এই দাবি জানান। 

নেতৃবৃন্দ বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেঞ্চুরি উৎযাপন, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষণ ও খুন, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেয়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসী কতৃক গৃহবধুকে ধর্ষণ ইত্যাদি সব অপকর্মের সঠিক বিচার না হওয়ায় আজ ছোট্ট আছিয়া হায়েনাদের কবল থেকে বাঁচতে পারেনি। ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া আইন ও বিচারব্যবস্থায় অপরা নির্মূল কখনোই সম্ভব নয়। এজন্য শরীয়া আদালত স্থাপন করে শরীয়া আইনে ধর্ষণ, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ইত্যাদি সহ সব ধরনের অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি গ্রাম-মহল্লা তথা তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে নগর-মহানগর পর্যন্ত সকল পর্যায়ে আলেম-উলামা, সচেতন ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে ‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সেল’ গঠন করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রমজান মাস কুরআন নাজিলের মাস। রমজান তাক্বওয়া তথা আল্লাহর ভয়ে সকল অপকর্ম থেকে বিরত থাকার শিক্ষা অর্জনের মাস। কুরআনের সাথে রমজানের সিয়াম সাধনার অঙ্গাঅঙ্গি সম্পর্ক রয়েছে। কুরআন আমাদেরকে শুধু অপরাধ থেকেই দূরে থাকতে বলে না বরং অপরাধের উপকরণ থেকেও দূরে থাকতে বলে। কুরআনের নির্দেশনার মাধ্যমেই সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা নির্মূল করা সম্ভব।
খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং মহানগর সেক্রেটারি মোফাচ্ছির হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী সুলতান মহিউদ্দীন।

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ  ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সেক্রেটারি মুফতী রফিকুল ইসলাম আশরাফী, পাক্ষিক সবার খবরের সম্পাদক মাওলানা আব্দুল গাফফার। 

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগরের নায়েবে আমীর মুফতী আখতারুজ্জামান আশরাফী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী মাহফুজ মুসলেহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মুফতী রুহুল আমীন, নির্বাহী সদস্য ও পল্টন থানা আহবায়ক মাওলানা আবুল হাসানাত, ডেমরা থানা নায়েবে আমীর মুফতী শাহাদাত হোসাইন, যাত্রাবাড়ি থানা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা জুম্মানুল আবেদীন, কলাবাগান থানা আহবায়ক মুফতী হাবিবুর রহমান, মতিঝিল থানা সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মাদ সাদ প্রমূখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, শিক্ষাঙ্গনগুলোতে  নীতি নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া হয় না। ফলে অপরাধ বাড়ছে। বিদেশী সংস্কৃতির কারণেও অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। অশ্লীলতা উসকে দেওয়ার সংস্কৃতি এদেশে চলতে দেওয়া যাবে না। অপরাধের শাস্তি প্রকাশ্যে দিতে হবে। 

খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, কোন অন্যায় কাজ দেখলে তার প্রতিবাদ করা, প্রতিরোধের চেষ্টা করাই ইসলামের শিক্ষা। তা না পারলে অন্তত মনে মনে ঘৃণা করা ও অন্যায় বন্ধ করার ফিকির চালু রাখতে হবে। চৌদ্দশত বছর আগে যে কুরআনের আইন দ্বারা হত্যা সন্ত্রাস বিদায় নিয়েছিল সে আইনের দ্বারাই এখনো হত্যা সন্ত্রাস বিদায় নিতে বাধ্য।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা মাহবুবুর রহমান অনতিবিলম্বে সরকারকে খেলাফত নেতৃবৃন্দের পেশকৃত দুইটি দাবি- শরীয়া আদালত স্থাপন করত অপরাধের বিচার নিশ্চিত করা এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সেল গঠন বাস্তবায়নের আহবান জানান।