রহমত নিউজ 17 November, 2024 06:20 PM
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ হয়। লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হলেও স্বাধীনতার সুফল থেকে দেশবাসি বঞ্চিত ছিলো। দীর্ঘ ৫৩ বছরে শাসকগোষ্ঠী জনগণকে শোষণ ও বঞ্চনা ছাড়া কিছুই দিতে পারিনি। বিগত পতিত শেখ হাসিনার সরকার দেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করেছিলো। গত জুলাই বিপ্লবে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে জাতি নতুন করে স্বাধীনতা লাভ করেছে। কিন্তু বিগত ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি জনগণ মেনে নিবে না।
তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে যেনতেন কাউকে নিয়োগ না দিয়ে জনগণের সেন্টিমেন্টকে ধারণ করে সে আলোকে দিতে হবে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা পরিষদ বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে পুরানা পল্টনস্থ আইএবি মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চরমোনাই পীর বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামের সৌন্দর্য জাতির সামনে তুলে ধরতে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদকে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতা বড় আশা নিয়ে নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়ে ফ্যাসিবাদকে বিতাড়িত করেছে। জনগণের চাহিদা পুরণে উপদেষ্টা সরকারকে কাজ করতে হবে। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনাসহ দোষীদের দ্রুত বিচার করতে হবে।
চরমোনাই পীর বলেন, সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর অতিবাহিত হলেও মুক্তিযুদ্ধের মূল লক্ষ্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজনে আরেকটি মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে হবে। এজন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে জনমনে সংশয় ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এজন্য নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে সে আলোকে সংষ্কার কাজ দ্রুত চালিয়ে নিতে হবে।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, বিগত শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযুদ্ধের ধোয়া তুলে হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়েছে। এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সনদ বাতিল করতে হবে। সেইসাথে স্বীকৃতবঞ্চিত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা অভাবের তাড়নায় রিকসা চালায় চা বিক্রি করে সে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের তুলে নিয়ে স্বীকৃতি দিতে হবে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে এবং নুরুজ্জামান সরকারের সঞ্চনালায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। বক্তব্য রাখেন, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ, মুক্তিযোদ্ধা জিএম গোলাম কিবরিয়া, মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেন, সেক্রেটারী জেনারেল মুক্তিযোদ্ধা খালেক্জুামান খান, প্রজন্ম শেখ মো. সাইফুল ইসলাম, মোয়াজ্জেম হোসেন তুহিন, রাকিবুল হাসান, অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম মিলন, মুফতি মুহাম্মাদ নাঈম, মুফতি ফেরদৌসি আল আজাদ, মুফতি আব্দুল্লাহ আল-মামুন, আতাউর রহমান রিয়াদ, কামরুল হক প্রমুখ।
সম্মেলন শেষে কামরুল হককে সভাপতি, মুহাম্মদ নুরুজ্জামান সরকারকে সহ-সভাপতি ও মাওলানা শেখ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে সেক্রেটারী জেনারেল করে ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর। পরে তিনি তাদেরকে শপথবাক্য পাঠা করান।