মদিনায় ৪০ বছর ধরে বিনামূল্যে চা-কফি খাওয়ানো সেই ব্যক্তি আর নেই

পবিত্র মদিনা জিয়ারতকারীদের অন্যতম প্রিয় এবং অতিথিপরায়ণ ব্যক্তি শেখ ইসমাইল আল জাইম আবু আল-সাবা ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। 

 গত ৪০ বছর ধরে তিনি হজ-ওমরা পালনকারীদের মধ্যে বিনামূল্যে চা, কফি, রুটি ও খেজুর বিতরণ করে আসছেন। সিরিয়ান এই নাগরিক মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৯৬ বছর বয়সে মদিনায় ইন্তেকাল করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হারামাইনের খবর সরবরাহকারী ভেরিফায়েড পেইজ ইনসাইড দ্য হারামাইন ও সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ এই খবর জানিয়েছে।

জানা যায়, প্রতিদিন ৪০টি ফ্লাস্কে করে চা-কফি আনতেন তিনি। সবুজ চা, লাল চাসহ নানা স্বাদের চা বানিয়ে আনতেন। থাকত চিনিযুক্ত, চিনিমুক্ত চা-কফি। এছাড়াও এলাচযুক্ত চা, পুদিনা চা, বিভিন্নরকমের মশলাযুক্ত চা আনতেন।

তিনি রাস্তার পাশে বসে পথচারীদের মধ্যে চা, কফি, খেজুর, রুটি ও বিস্কুট বিনামূল্যে বিতরণ করতেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করতেন ছেলেরা।

গালফ নিউজ বলছে, সিরিয়ার হামা শহরে জন্মগ্রহণকারী আবু আল সেবা ৫০ বছরেরও বেশি আগে মদিনায় চলে আসেন এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে শহরটির অন্যতম বিখ্যাত ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। মদিনার কুবা এভিনিউতে একটি সাধারণ বাড়িতে বসবাস করলেও নিজের সম্পদ পুরোটাই উৎসর্গ করেছিলেন হজ ও ওমরা যাত্রীদের খেদমতে।

গালফ নিউজ আরও জানায়, শেখ ইসমাইলের প্রতিদিনের কাজের অংশ ছিল প্রচুর পরিমাণে কফি, চা এবং রুটি তৈরি করা, যা তিনি বিখ্যাত কুবা মসজিদের কাছে বসে বিতরণ করতেন। সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে খেজুর ও আদাও নিয়ে যেতেন তিনি। অন্যদের সেবা দিতে শেখ ইসমাইলের অক্লান্ত প্রতিশ্রুতি স্থানীয় সীমানা অতিক্রম করে সারা বিশ্ব থেকে মদিনায় আগত লাখ লাখ মানুষের হৃদয়ও স্পর্শ করে। 

এর আগে বহু সাক্ষাৎকারে শেখ ইসমাইল আল জাইম আবু আল-সাবা  বলেছেন, কারও কাছ থেকে কোনো আর্থিক সহায়তা নয়; কেবলমাত্র মহান আল্লাহ’র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই বিনামূল্যে খাবার ও পানীয় সরবরাহ করেন তিনি।  

টানা চার দশক ধরে অনন্য এই সেবার কারণে সবার কাছে তিনি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হন। তার ইন্তেকালে মদিনায় শোকের ছায়া নেমে আসে।