| |
               

মূল পাতা রাজনীতি তফসিল নিয়ে বিএনপি, আ’লীগ ও অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া কি?


তফসিল নিয়ে বিএনপি, আ’লীগ ও অন্যান্য দলের প্রতিক্রিয়া কি?


রহমত নিউজ ডেস্ক     16 November, 2023     02:16 PM    


আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। নির্বাচন কমিশন বুধবার সন্ধ্যায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার পর সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তফসিল প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণের পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং চলমান অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার জন্য সংবিধান অনুযায়ী সময় মতো নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই।

বিএনপির প্রতিক্রিয়া
নির্বাচন কমিশন এমন এক সময়ে এ তফসিল ঘোষণা করেছে যখন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য বিএনপি এবং তাদের সমমনা দলগুলো অবরোধ কর্মসূচী পালন করছে। তফসিল ঘোষণার পরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির এক ভার্চুয়াল ব্রিফিং করেন। এরপর তার সে লিখিত বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়। রিজভী বলেন, বাংলাদেশের প্রত্যাশা, জনমত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর্যুপরি আহবান উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন একতরফা নির্বাচনের তামাশার তফসিল ঘোষণা করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার তার ভাষণে বলেছেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করবেন। এটা ডাহা মিথ্যা, ভন্ডামিপূর্ণ ও মেকি। শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন বিশ্বাস করা চোরাবালিতে পড়ার সামিল। এই নির্বাচন কমিশন সব জেনে-শুনেই দেশকে এক গভীর সংকটের মধ্যে ঠেলে দিতে তফসিল ঘোষণা করেছে। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া
তফসিল ঘোষণার পরে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল-সমাবেশ করেছে। ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করতে যাচ্ছে। আমরা দেশের সকল ভোটারকে স্বতঃ:স্ফূর্ত-ভাবে এবং উৎসবমুখর পরিবেশে এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ভোট প্রদানের জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আগামী ১৭ই নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির নেতৃত্বে দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে মনোনয়ন ফর্ম বিক্রিও শুরু হবে। যে ট্রেন ছেড়ে গেল, সে ট্রেন থামানোর কোনও ক্ষমতা তাদের নেই। নির্বাচনী ট্রেন কারো জন্য অপেক্ষা করবে না। আপনি না উঠলে কি ট্রেন থেমে থাকবে?

চরমোনাই পীরের প্রতিক্রিয়ায়
নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আমীর ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম তফসিল বলেছেন, জন আকাঙ্খার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি না করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা জনগনের সাথে তামাশার শামিল। একতরফা তফসিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করল। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে দলীয় সরকারের বাইরে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে তা দেশের জনগণ কোনভাবেই মেনে নিবে না।  আজকের নির্বাচনী তফসিলে দেশের জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে না।  বর্তমান নির্বাচন কমিশন আরো একটি প্রহসনের নির্বাচনের পথে হাটার যে ঘোষণা দিয়েছে তা জনগণ সফল হতে দিবে না। সরকার এই ইসিকে দিয়ে একতরফা নির্বাচন করতে চেয়েছে। বিরোধী আন্দোলনকে সহিংস আখ্যা দিয়ে দমন করতে চেয়েছে। সরকার একতরফা নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতার বৈতরণি পার হতে চায়। জনগণ এবার তা গ্রহণ করবে না। দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন আগেও হয়নি, আওয়ামী লীগের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না, এটি প্রমাণ হয়েছে।

খেলাফত মজলিসের প্রতিক্রিয়ায়
দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের গণদাবীকে উপেক্ষা করে একতরফাভাবে আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষিত একতরফা নির্বাচনের একতরফা নির্বাচনের তফসিল বাতিলের দাবি জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। বুধবার (১৫ নভেম্বর) কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকে এ দাবী জানানো হয়। বৈঠকে বলা হয়, দেশবাসী মনেকরে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনভাবেই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এ সরকারে অধীনে অনুষ্ঠিত ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন নির্বাচন ও ২০১৮ সালের নৈশভোটের নির্বাচন তার প্রমান। তাই দেশবাসীর দাবী ছিলো দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কিন্তু সরকার গণদাবীকে উপেক্ষাকরে বিগত দু’টি নির্বাচনের মতো আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। আর সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগেই ব্যর্থ হয়েছে। বৈঠকে দেশ ও জাতির স্বার্থে আগামী ৭ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে ঘোষিত একতরফা নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে, দলনিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা করে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জোর দাবী জানানো হয়।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী। যেসব বামপন্থী রাজনৈতিক দল সরকার বিরোধী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত আছে তারাও নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গের দলগুলো – জাসদ ও ওয়াকার্স পার্টি নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে। জামায়াতের তরফ থেকে এক বিবৃতিতে নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।