| |
               

মূল পাতা রাজনীতি বিএনপি এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না : মির্জা ফখরুল


এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না : মির্জা ফখরুল


রহমত নিউজ ডেস্ক     23 July, 2023     09:10 AM    


বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এবার এই দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। ৩৬টি দল যুগপৎভাবে ঘোষণা দিয়েছে, আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই। সে জন্য অবিলম্বে শেখ হাসিনার সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। শুধু বিএনপি নয়, জাতীয় পার্টিও চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলনও পরিষ্কার করে বলেছে, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই কালবিলম্ব না করে পদত্যাগ করুন। সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভয় পায়। ভয় পায় বলেই তারা ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। আর নিরপেক্ষ নির্বাচনে কখনো জয়ী হতে পারবে না, সেটি নিশ্চিত হয়েই তারা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে সংবিধান থেকে নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। গত ১৪-১৫ বছরে এই সরকার বাংলাদেশের যে ক্ষতি করেছে, অতীতে আর কখনো এমন ক্ষতি হয়নি। সবচেয়ে যে ক্ষতি হয়েছে সেটা হচ্ছে, এ দেশের মানুষ ভোট দিতে চায়, কথা বলতে চায়, এই দেশের লেখক-সাংবাদিকেরা লিখতে চায়, সবগুলোকে বন্ধ করে দিয়ে আজকে এই সরকার একটি অলিখিত একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল চালু করেছে।

শনিবার (২২ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির তিন সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যৌথ আয়োজিত ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে ঢাকা, কুমিল্লা, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের তিন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা অংশ নেন। এর আগে পাঁচটি বড় শহরে তারুণ্যের সমাবেশ শেষে আজ ঢাকায় সর্বশেষ সমাবেশ করে। এতে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাড়িয়ে নেতা-কর্মীরা রমনা পার্ক, শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন সড়কে ছড়িয়ে পড়েন। এ সময় পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সমাবেশে মির্জা ফখরুল ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকায় নয়াপল্টনে মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সভাপতির বক্তব্যে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর েসভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি বলেন, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, মোস্তাক মিয়া, শামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ, গত দুটি নির্বাচনে ভোট দিতে না পারা তরুণ আইনজীবী খন্দকার আসমা হামিদ, জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক উল্লেখ করে পত্রিকায় নিবন্ধ লেখার দায়ে চাকরিচ্যুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোরশেদ হাসান খান, চাকরিচ্যুত চিকিৎসক সানসিলা জেবরিন, নির্যাতিত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল প্রমুখ।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার একটা ‘ভীরু ও কাপুরুষ’ সরকার, তারা নির্বাচনে ভয় পায়। বিএনপি যাতে নির্বাচন করতে না পারে, সে জন্য তারা নেতা-কর্মীদের নামে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৮৬টি মামলা দিয়েছে। এমন লোক নেই যে মামলা নেই। এত মামলা দেন কেন? কারণ আপনারা ভয় পান বিএনপিকে।’ তিনি বলেন, ২০১৮ সালে নির্বাচন শুরুর আগে থেকেই যেভাবে মামলা দেওয়া শুরু করেছিল, আজকে আবার একই কায়দায় গায়েবি মামলা শুরু করেছে। যাতে বিএনপি নির্বাচনের আগে মাঠে আসতে না পারে। এগুলো কিসের আলামত, সে প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তারা ইতিমধ্যে নতুন একটা কৌশল শুরু করেছে, সেটা হচ্ছে বিএনপির সিনিয়র নেতা, জনপ্রিয় নেতাদের মামলা দ্রুত শেষ করে সাজা দেওয়া শুরু করেছে। এই অপকৌশল এ দেশের মানুষ সহ্য করবে না। মির্জা ফখরুল সমাবেশে অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীদের প্রশ্ন করেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যাবে, এমন প্রশ্নে সবাই সমস্বরে ‘না’ বলে জবাব দেন।

তিনি বলেন, এবারকার ভোটের আলামত আমরা সেই দিন দেখলাম ঢাকা-১৭ আসনে। দেখেছেন না হিরো আলমকে। বেচারা হিরো আলম। বাচ্চা ছেলে, আমি খুব কষ্ট পেয়েছি। সে একটা আশা নিয়ে গিয়েছিল যে অন্তত তাকে ভোটটা করতে দেবে। কিন্তু এটা যে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ হচ্ছে সেই দল, যারা কাউকে সহ্য করতে পারে না। ওরা মনে করে, এই দেশ তাদের বাপের তালুকদারি। অথচ ২০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই দেশ। গত সপ্তাহে রাজধানীর উত্তরা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির নেতা কবির হোসেনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নেওয়ার ১৬ ঘণ্টা পর চোখ বাঁধা অবস্থায় তাঁকে বাসার সামনে ফেলে গেছে। র‍্যাবের ওপরে স্যাংশন হয়েছে, তারপরও এই ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। লক্ষ্য একটাই, ভয় দেখিয়ে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা। এবার তারা নতুন নতুন কৌশল করেছে। সব ডিসি-এসপি তারা তাদের পছন্দমতো নিয়োগ দিচ্ছে। উদ্দেশ্য কী, দিনের আলোয় তারা কৌশল করে সিলে মেরে আবার নিয়ে যাবে। কিন্তু বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাও ধান, এবার আর সেটা হবে না বলে হুঁশিয়ার করে দেন তিনি।