| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘যদি নিজেদের ভালো চান, অবিলম্বে কারাবন্দি আলেমদের মুক্তি দিন’


‘যদি নিজেদের ভালো চান, অবিলম্বে কারাবন্দি আলেমদের মুক্তি দিন’


রহমত নিউজ ডেস্ক     23 July, 2023     08:54 AM    


মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দী আলেমদের দ্রুত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, সরকারের এই নির্দয় আচরণ যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপ্রসূত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এটি সুস্পষ্ট আইনি অধিকার হরণ এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এসব কারণে সরকার ওলামায়ে কেরাম ও বৃহত্তর ইসলামি জনতার সমর্থন হারিয়েছে। আজ বন্দী আলেমেদের মুক্তির দাবি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আমি সরকারকে বলব, যদি নিজেদের ভালো চান, অবিলম্বে কারাবন্দি সকল আলেমকে মুক্তি দিন। হয়রানি বন্ধ করুন।  অন্যথায় সরকারের পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

শনিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে কাজী বশির মিলনায়তনে মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দি ওলামায়ে কেরামের মুক্তি, দেশব্যাপী আলেম ওলামাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আলেমদের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য প্রতিষ্ঠায় করণীয় নির্ধারণে শায়খুল হাদিস পরিষদ আয়োজিত জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে শায়খুল হাদিস পরিষদের পক্ষ থেকে মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের মুক্তি ও সারা দেশে আলেম-উলামাসহ তাওহিদী জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২০ আগস্ট দেশব্যাপী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদাণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমি অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি, দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় মাওলানা মামুনুল হক, মুফতি মুনীর হোসাইন কাসেমী, মুফতি নূর হোসেন নূরানী, মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীসহ আরও অনেক আলেম কারাগারে বন্দী আছেন। অতি সাধারণ মামলায় তাদের এত দীর্ঘ সময় সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার বন্দি করে রেখেছে। আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পরও তারা মুক্তি পাচ্ছে না। নতুন মামলা দিয়ে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। কঠোর গোয়েন্দা নজরদারি ও প্রশাসনিক চাপ প্রয়োগ করে দেশের কওমি মাদরাসাগুলোকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় রাখা হয়েছে। জুমার খুতবা ও ওয়াজ-মাহফিল নিয়ন্ত্রণ করার বার বার চেষ্টা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় ও নাগরিক স্বাধীনতাও খর্ব করা হয়েছে।’

সভাপতির বক্তব্যে শায়খুল হাদিস পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, ‘আমরা বাহ্যত চারজন উলামার মুক্তি দাবি করছি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমরা সবাই বন্দী। আমরা ওলামা মাশায়েখ ও সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে দেখেছি তাদের হৃদয়ে আগুন জ্বলছে। যদি অতি দ্রুত আলেমদের মুক্তি না দেন, তাহলে তাদের হৃদয়ের আগুনে আপনারা পুড়ে যাবেন। আলেম-উলামাসহ সর্বস্তরের তওহীদি জনতার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে দেশ ও জাতিকে মুক্তি দিন।’

খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটির আমির মাওলানা আব্দুল হামীদ, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা ইসমাইল নূরপুরী, জামিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, শায়খুল হাদিস পরিষদের সভাপতি মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আওয়াল, সদ্য কারামুক্ত মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, বেফাক সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল হক, জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ আলী, হাটহাজারী মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মুসলীম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, শায়খুল হাদিস পরিষদের সহসভাপতি মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন ও মাওলানা মুহাম্মাদুল্লাহ, পটিয়া মাদরাসার নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আবু তাহের নদভী,  জামিয়াতুন নূর, উত্তরার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, চট্টগ্রাম দারুল মাআরিফের নায়েবে মুহতামিম মাওলানা ফুরকানুল্লাহ খলীল, তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, বরিশালের জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়ার মুহতামিম মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, যুব মজলিসের সভাপতি পরিষদ সদস্য আবুল হাসানাত জালালি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আযহারী, মানিকগঞ্জের পীর হজরত মাওলানা সাঈদ নূর, ফরিদপুর জামিয়া কুরআনিয়া চরকমলপুর মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা হেলালুদ্দীন, বরিশাল জামিয়া ইসলামিয়া হোসাইনিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা মোজাম্মেল হুসাইন, নারায়ণগঞ্জের মাওলানা আবু তাহের জিহাদী, কুমিল্লার মাওলানা মনিরুল ইসলাম, হবিগঞ্জের মাওলানা লোকমান সাদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাওলানা ইয়াকুব উসমানী প্রমুখ।    স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মুমিন ও মাওলানা এহসানুল হকের যৌথ পরিচালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন শায়খুল হাদিস পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক। সকাল সাড়ে আটটায় তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সম্মেলনটি শুরু হয়।