রহমত নিউজ ডেস্ক 10 July, 2023 06:35 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের দেশে গণমাধ্যম অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করে, প্রয়োজন দায়িত্বশীলতার। আধুনিক গণতন্ত্রের সূতিকাগার যুক্তরাজ্যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যেমন আছে, গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতাও আছে। সেখানে একটি অসত্য সংবাদ পরিবেশনের কারণে ১৩০ বছর চলার পর বিশ্বখ্যাত পত্রিকা ‘নিউজ অভ দ্যা ওয়ার্ল্ড’ বন্ধ হয়ে যায়। যুক্তরাজ্যের একজন এমপির বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে বিবিসির পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। ক’দিন আগে বিবিসির মহাপরিচালককে পদত্যাগ করতে হয়েছে। যুক্তরাজ্যে টেলিভিশন এবং পত্রিকায় অসত্য বা ভুল সংবাদ বা কারো ব্যক্তিগত বিষয় প্রকাশের কারণে সেই গণমাধ্যমকে মোটা অংকের জরিমানা দিতে হয়। আমাদের দেশে ভুল সংবাদ পরিবেশনের কারণে কোনো পত্রিকা বন্ধ হয়নি, কোনো টেলিভিশনের পুরো টিমকে পদত্যাগ করতে হয়নি। গণমাধ্যমের কাছে আমার একটি বিনীত নিবেদন- স্বাধীনতার পাশাপাশি দায়িত্বশীলতার দিকেও আমাদের সচেতন থাকতে হবে। তাহলেই গণমাধ্যম গণতন্ত্র সংহত হবে, দেশ এগিয়ে যাবে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় দেশ পৌঁছাবে।
সোমবার (১০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে অসুস্থ, অসচ্ছল এবং দুর্ঘটনায় আহত ও নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের ৬৫ জনের মাঝে ৬৯ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৪২ জন সাংবাদিকের অনুকূলে ট্রাস্ট থেকে ৬ কোটি ১৫ লাখ টাকা এবং ২ হাজার ২৯৮ জনকে প্রধানমন্ত্রীর করোনাকালীন বিশেষ সহায়তা হিসেবে ২ কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা দেয়া হয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ধারণাটি জননেত্রী শেখ হাসিনার চিন্তাপ্রসূত। তিনিই প্রথম জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঘোষণা দেন যে মাঝে মধ্যে সহায়তা দেয়ার চেয়ে একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানো উত্তম। তার সেই চিন্তা থেকেই প্রথমে কল্যাণ তহবিল গঠন ও তারপর সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট গঠিত হয়। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আজকে সত্যিকার অর্থে দেশে যেসব সাংবাদিক কষ্টে থাকেন, দুর্ঘটনায় পড়ে আহত অথবা নিহত হন, তাদের ও পরিবারের জন্য একটি ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিও’র যাত্রা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই শুরু হয়েছে, ২০০৮ সালে ছিলো ১০টি টেলিভিশন, এখন ৩৫টি টেলিভিশন সম্প্রচারে আছে। আরো ৭-৮টি সম্প্রচারের অপেক্ষায়। ৪শ’ দৈনিক পত্রিকা ছিলো ২০০৯ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি। এখন সাড়ে ১২শ’ দৈনিক পত্রিকা। সম্প্রচার হচ্ছে বেসরকারি এফএম ও কমিউনিটি রেডিও, প্রকাশিত হয় হাজার হাজার অনলাইন পত্রিকা। গণমাধ্যমের এই যুগান্তকারী বিকাশ জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ সরকারের গণমাধ্যমবান্ধব নীতির কারণেই সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমের এই বিকাশের সাথে সাথে গণতন্ত্রের বিকাশও ঘটেছে, আপনারা জানেন যে, প্রতিনিয়ত সকাল-বিকাল-সন্ধ্যাবেলায় বিরোধী দল বিশেষ করে মির্জা ফখরুল সাহেবসহ তাদের নেতারা বলেন- আমাদের কথা বলার অধিকার নাই। তারা তিনবেলা কথা বলেন আর বলেন- আমাদের কথা বলার অধিকার নাই। তাদের এই হাঁকডাক এবং ‘গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন’ মন্তব্যের মধ্যেই বাংলাদেশ গত বছর গণতন্ত্র সূচকে দুই ধাপ এগিয়ে ৭৫তম থেকে ৭৩তম স্থানে উন্নীত হয়েছে। আর সুখী দেশ সূচকে আমরা ৭ ধাপ এগিয়েছি, সুখী সূচকে ভারত, পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে আমাদের অবস্থান এখন ৯৪তম। ভারতের অবস্থান ১৩৬তম, পাকিস্তানের ১২১তম, শ্রীলংকার অবস্থান ১২৭তম। এটি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সুশাসনের প্রমাণ, গণতন্ত্রের অভিযাত্রার প্রমাণ।