| |
               

মূল পাতা আরো তথ্য প্রযুক্তি ‘ইন্টারনেটের কারণে ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় ভুগছে’


‘ইন্টারনেটের কারণে ৯১ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় ভুগছে’


রহমত নিউজ ডেস্ক     02 July, 2023     11:12 AM    


বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের বিকল্প নেই বললেই চলে। তবে অন্য অনেক কিছুর মতো ইন্টারনেটের ব্যবহারও থাকা উচিত নিয়ন্ত্রণে। মাত্রাতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহার আসক্তি সৃষ্টি করে। এই আসক্তির মূলে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন বা ইন্টারনেটের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার। এতে মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইন্টারনেট আসক্তি সবার একই রকম হয় না। স্ক্রিন অ্যাডিকশন– ইন্টারনেটে যে কোনো কিছু চলুক না কেন, তাঁর মোবাইল ফোন বা কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। সোস্যাল মিডিয়া অ্যাডিকশন– এই আসক্তিতে ফেসবুক বা টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেই তাঁরা নিজের জীবন বলে মনে করেন।

অনলাইন অ্যাফেয়ার্স– এই আসক্তিতে অনলাইনে যে কোনো খবরেই আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে বন্দি করে ফেলেন। পর্নো অ্যাডিকশন– যৌন উত্তেজক ছবি, অডিও, ভিডিও ও লেখার প্রতি আসক্ত মানুষের সংখ্যা এ সময়ে ব্যাপকহারে বাড়ছে। সেক্সটিং– যৌন উত্তেজক বার্তার প্রতিও ইদানীং অনেকের আসক্তি দেখা যাচ্ছে। ইন্টারনেট গেইম অ্যাডিকশন– সম্প্রতি অনলাইনে বেশকিছু গেইম প্রকাশিত হয়েছে। এগুলোর প্রতি তরুণদের একটি বড় অংশ আসক্ত হয়ে পড়ছে। যে কোনো শ্রেণি, পেশা বা লিঙ্গের মানুষ ইন্টারনেটের জালে বন্দি হয়ে যেতে পারেন। তবে উঠতি তরুণ বা যুবসমাজ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আসক্ত এবং ছেলেরা তুলনামূলক মেয়েদের চেয়ে বেশি আসক্ত। আসক্ত অধিকাংশই বাস্তব জীবনে অন্তর্মুখী স্বভাবের হয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের ওপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি।

সম্প্রতি আঁচল ফাউন্ডেশনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্টারনেটের কারণে ৯১ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থী মানসিক সমস্যায় ভুগছে। এদের মধ্যে ২৬.১ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করে, তাদের সমস্যার ‘পুরোপুরি দায়’ ইন্টারনেটের। ‘মোটামুটি দায়ী’ করতে চায় ৫৯.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকিরাও তাদের মানসিক সমস্যার জন্য ইন্টারনেটকে কমবেশি দায়ী মনে করছে। সমীক্ষায় ইন্টারনেটসহ মোবাইল-কম্পিউটারের মতো বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস (যন্ত্র) ব্যবহারের কারণে শিক্ষার্থীদের সমস্যা মোকাবিলার তথ্য বের হয়ে এসেছে।

আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট তানসেন রোজ বলেন, ‘ইন্টারনেট আসক্তিতে ঘুম ও শারীরিক সমস্যাও তৈরি করছে। কখনও কখনও অতিরিক্ত সময় ধরে ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার এই সমস্যা সৃষ্টি করে। আঁচল ফাউন্ডেশনের সমীক্ষায় দেখা যায়, ৫৮.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন পরিমিত ঘুম ঘুমায় না। ইন্টারনেট ব্যবহার পর্নোগ্রাফিতেও আসক্তি বাড়িয়েছে। ভিডিওর পাশাপাশি যৌন উত্তেজক গল্প শোনা কিংবা পড়া ইন্টারনেট আসক্তদের এক অন্যতম আকর্ষণ।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে মানসিক সমস্যা দেখা যায়, তা হলো মানসিক অবসাদ ও বিষণ্ণতা। এ ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের একটা বড় প্রভাব রয়েছে। খেলার মাঠ কমে যাওয়া ও বিনোদনের অভাব এ সমস্যা ব্যাপকহারে বাড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য পরিবার ও সমাজের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। এজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও পরিকাঠামো নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই।’


সূত্র : সমকাল অনলাইন