| |
               

মূল পাতা সারাদেশ ইসলামপুরের যমুনার বাম তীরে কোটি টাকার অবৈধ বালু ব্যবসা! 


নদীর বালুমহাল বসতবাড়ী রাস্তা ও বাঁধের পাশে!

ইসলামপুরের যমুনার বাম তীরে কোটি টাকার অবৈধ বালু ব্যবসা! 


ওসমান হারুনী     30 April, 2023     04:03 PM    


জামালপুরর ইসলামপুরের পাথর্শী মোরাদাবাদ ঘাটে নদী থেকে যমুনার বাম তীরে উত্তোলন করা কোটি টাকার অবৈধ বালুর ব্যবসা চলছে! নদীর বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে রাস্তা ও বাঁধের পাশে বসতি এলাকায় ৩০/৪০ ফুট উচ্চতার বালুর স্টক করায় বালু বাতাসে উড়ে আশপাশের বাড়িঘরে গিয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন নিরব ভূমিকায় রয়েছেন।

এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত১০/১২ বৎসর পূর্বে যমুনা নদীর ভাঙ্গনে ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের মারাডুবুরী পাথর্শী ও শশারিয়া বাড়ী নামক ২টি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বিষয়টি তৎকালীন আওয়ামী লীগে সরকারের নজরের আসায় তড়িত গতিতে নদী ভাঙ্গন রোধে প্রায় ৪৬৮ কোটি টাকা ব্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় যমুনা নদী বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নর হওয়ার ফলে অত্র এলাকাটি নদী ভাঙ্গনের কবল হতে রক্ষা পায় এবং দ্রুত সময়ের ব্যবধানে এই বাস্তবায়িত প্রকল্পটি ঘেষিয়া নদীতে একটি বিশাল চর জেড়ে উঠে। এই চরে এলাকার কৃষকরা নানান ধরণে শস্য উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্ত সম্প্রতি আবার এলাকার চিহ্নিত সমাজ দ্রোহী বালু দস্যুরা স্থানীয় প্রশাসনের যোগশাজসে নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন শুরু করেছে। এই বালি দস্যু সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে মরাডুবুরী গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে পাথর্শী ২নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম, পাথর্শী মৃৃত দরিব উদ্দিন সরকারের ছেলে হাসানুজ্জামান শাপলা, পাথর্শী  মরাডুবুরী গ্রামের মৃত আমির উদ্দিনের ছেলে সাহেব আলী, পাথর্শী মৃত ইনছান আলীর ছেলে মজনু শেখ, একই এলাকার মৃত কালু শেখের  ছেলে জামাল শেখ(ঘুটু শেখ)সহ টএরশাদ, মিজান.ইসমাইল, ফারুকসহ একটি সিন্ডিকেট। যারা বর্তমানে সুযোগ পেলেই নদী থেকে কৌশলে বালি উত্তোলন করে স্টক করে ব্যবসা করছে।

অভিযোগ উঠেছে, বালি ব্যবসায়ীরা তাদের  অবৈধ খণিজ সম্পদ বালির ব্যবসা নিয়ন্ত্রনে নিতে তাদের অনুগত লোক দ্বারা একটি লাঠিয়াল বাহিনীও গঠন করেছে।  যাদের মাধ্যমে ৬টি ড্রেজার ও বুলগেট দ্বারা নদরে ভাঙ্গন রোধে বাস্তবায়িত প্রকল্প সংলঘু যমুনা নদীতে অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে সুযোগ পেলেই হাজার হাজার ঘণফুট বালি উত্তোলণ করে প্রকল্পের সংলঘু নদীর তীরে কয়েকটি পয়েন্টে অবৈধ বালুর মহাল প্রতিষ্ঠা করে উত্তোলনকৃত বালু বিক্রয় করে আসা অবস্থায় সচেতন এলাকাবাসীর প্রতিবাদে ১বছর ধরে বালি উত্তোলন ও বিক্রয় বন্ধ ছিল। ওই চক্রটি বর্তমানে আবারও কৌশল পরিবর্তন করে বগুড়া জেলার অন্তর্গত সারিয়াকান্দী নামক স্থানে সরকারি বালুর মহালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হতে বালুর ক্রয়ের ক্যাশম্যামো/চালান সংগ্রহ করে ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর হাসান রুমানকে দেখিয়ে ম্যানেজ করে পুনরায় নদী থেকে বালুর উত্তোলনের শুরু করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে ওই বালুর দস্যু চক্রটি  পাথর্শী ও কুলকান্দি ইউনিয়নের মরাডুবুরী ও কুলকান্দি গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়িত প্রকল্পের উপর নদীর তীরবর্তী স্থানে ৩০-৪০ ফুট উচ্চতায় বালুর কয়েকটি স্টক করে বালু বিক্রি ঘাটি করেছে। এখান থেকে বালু বাতাসে উড়ে আশপাশের গ্রামের বাড়িঘরে গিয়ে পড়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। যমুনা থেকে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার দ্বারা বালু উত্তোলন করায় নদীর তলদেশ গভীর হচ্ছে। যার ফলে জেগে উঠা বিশাল ফসলী জমির চরটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে শতশত কৃষক তাদের জেগে উঠে জমি হারিয়ে আবারও ভূমিহীন হওয়ার আশংকা করছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত কয়েক দিন আগে উপজেলা  থেকে প্রশাসনের লোকজন এসে মোরাদাবাদ  রোডের পাশে একটি বালুর স্পটে নাম মাত্র জরিমানা করলেও রহস্য জনক কারণে যমুনা বামতীর সংরক্ষণ বাঁধের পাশে কোটি টাকার  দুইটি অবৈধ বালির স্পটে কোন জরিমানা বা জব্ধ করা হয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ,মোরাদাবাদ ঘাটে বালু ব্যবসায়ী হাসানুজ্জামান শাপলা, ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম গংরা সম্প্রতি আবারও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে যমুনার নদীর পাথর্শীর শশারিয়াবাড়ী বেড়পাড়া জেগে উঠা যমুনার চরে ভলগেট দিয়ে রাতের আধাঁরে বালু উত্তোলন করে আসছে। ফলে চরের হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি ও যমুনা বামতীর সংরক্ষণ সাড়ে চারশত কোটি টাকার প্রকল্প হুমকি মূখে পড়েছে। বালু দস্যু চক্রটি কৌশলে বগুড়া সারিয়াকান্দি নামক স্থানের বালু মহলের প্রতিষ্ঠান থেকে বালু ক্রয়ের ক্যাশমোমো চালান সংগ্রহ করে উপজেলা প্রশাসনেক ম্যানেজ করে অপরিকল্পিভাবে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইয়েনের কোন তোয়াক্কা না করে ইসলামপুরের যমুনা বিভিন্ন স্পট থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করছে। ইসলামপুর যমুনার  চরের কোন স্পটের সরকার অনুমোদিত বালুমহাল না থাকলেও বালু দস্যুরা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলে বাঁধ ও বসতি এলাকায় অবৈধ বালু মহাল তৈরী করেছে। স্থানীয় প্রশাসন এব্যাপারে যথাযথ আইন প্রয়োগে নিরব ভূমিকায় রয়েছেন।

ইসলামপুর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তানভীর হাসান রুমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ঘাটে বালি খালাস করা হয়। রাতে কখন নদী থেকে বালি তুলা হয় তিনি জানেন না। নদী থেকে অবৈধভাবে কেউ বালি  উত্তোলন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এব্যাপারে এলাকাবাসী আইন প্রয়োগে স্থানীয় প্রশাসনের কোন আস্থা না পেয়ে বাধঁ ও চরের ফসল ও জমি ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষাসহ বাঁধ ও বসতি এলাকায় অবৈধ বালু মহালের বালুজব্ধসহ গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধসহ বালি দস্যুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছেন।


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ময়মনসিংহ জামালপুর ইসলামপুর