বাংলাদেশে কোন অতি-দারিদ্রতা থাকবে না : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে কোন অতি-দারিদ্রতা থাকবে না। সরকার বিনা খরচে বাড়ি প্রদান, স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে  দেয়া এবং দেশবাসীর অবস্থার পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার হার বৃদ্ধিসহ সবকিছুই করছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। আজ (১২ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সারা দেশের জেলা শাখার নেতাকর্মীরা গণভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

দলের নেতাদের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে দলকে আরো শক্তিশালী করার পাশাপাশি যে কোনো ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। অনেকেই এমন গতিতে একটি দেশের অগ্রগতি চায় না-তাই, তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।  সরকার ২০০৯ সাল থেকে টানা তিন মেয়াদে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের কঠোর পরিশ্রমের কারণে দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে এবং অতি-দরিদ্রের হার ২৫ শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। সরকার দ্রুততম সময়ে দারিদ্র্যের হার আরও দুই বা তিন শতাংশ কমিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে আরো গতিশীল করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আওয়ামী লীগের সংগঠন আরো শক্তিশালী হোক। জাতীয় নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে, আওয়ামী লীগকে আরো শক্তিশালী করে জনগণের কল্যাণে আরও সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীন করেছেন, তাই আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।  দলীয় নেতা কর্মীদের স্মরণ করিয়ে দেন যে- দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। কারণ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো রাজনৈতিক দলগুলো সামরিক স্বৈরশাসকের পকেট থেকে গঠিত হয়েছিল। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো দল মাটি ও মানুষের দল নয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাসস্থানের মতো প্রতিটি খাতে বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করেছে।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর সুফল দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পেলেও বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন   দেখতে পাচ্ছেন না বলে বিএনপি নেতা ও তাদের সমমনাদের কঠোর সমালোচনা করেন। তারা কোনো উন্নয়ন দেখছে না। তারা প্রতিদিনই এমন কি রমজানের দিনেও উচ্চকণ্ঠে মিথ্যা কথা বলছে। কেন তারা এমন করছে- আমি তা বুঝতে পারছি না। সরকার জনগণের জন্য কাজ করেছে আর এ কারণেই জনগণ তাঁর দলকে ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কোনো ভোট কারচুপির প্রয়োজন নেই কারণ তারা সবসময় জনগণের  সেবা করে তাদের আস্থা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে। আওয়ামী লীগ কখনোই ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আসে না।

তিনি আরো বলেন, যারা নির্বাচনের কথা বলছে, তারা বন্দুকের মুখে ক্ষমতায় এসেছে। তাই, জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, এ নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল ২৯ আসন।বিএনপি এখনও তাদের আগের অবস্থানে অটলরয়েছে। অথচ দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করে আওয়ামী লীগ তার অবস্থানকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছে।  ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে বাবা-মা, ভাইসহ সর্বস্ব হারানোর পর তিনি দেশবাসীকে নিজের কাছের মানুষ ভেবে তাদের জন্য কাজ করছেন। বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। আমি যা কিছু করেছি-তা মানুষের জন্য করেছি। আপনারা (দলের লোকজন) আমার পাশে থাকলে আমি জনগণের জন্য কাজ করতে পারবো। সবকিছু হারিয়ে দেশে ফিরে আসার পর আশ্রয় দেয়ায় দেশবাসী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।