পাকিস্তানজুড়ে গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়া তীব্র হবে, হুঁশিয়ারি ইমরানের

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তান-তেহরিক-ই ইনসাফ-পিটিআই পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছেন। তাকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে সেই কমিটি দল পরিচালনা করবে। আর তাকে গ্রেপ্তারের তীব্র প্রতিক্রিয়া পুরো পাকিস্তানজুড়ে দেখা যাবে বলেও হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন পাকিস্তানের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

শনিবার আদালতে যাওয়ার আগে লাহোরে নিজ বাসভবনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানিয়েছেন তিনি। তোশাখানা মামলায় সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারে যে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, শনিবার আদালতে সেই মামলার শুনানিতে অংশ নেওয়ার আগে রয়টার্সের সাথে কথা বলেছেন তিনি। গত বছর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন সাবেক এই ক্রিকেট কিংবদন্তি। দেশটিতে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করার ব্যর্থ চেষ্টা করে। ওই সময় লাহোরের জামান পার্কের বাসভবনে তাকে গ্রেপ্তার করতে যাওয়া আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সাথে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের তীব্র সংঘর্ষ হয়।

ইমরান খান বলেছেন, আমি একটি কমিটি করেছি, যদি আমি কারাগারের ভেতরে থাকি, তাহলে এই কমিটি স্পষ্টতই সিদ্ধান্ত নেবে। বর্তমানে তার জীবনের জন্য হুমকি আগের চেয়ে বেশি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং সামরিক বাহিনী তাকে এই বছরের শেষের দিকের নির্বাচনে দাঁড়ানো থেকে বাধা দিতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তবে এই বিষয়ে কোনও ধরনের প্রমাণ দেখাতে পারেননি তিনি। তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় ৯৪টি মামলা আছে। এখন তাকে গ্রেফতার করার কোনও কারণ নেই। কারণ তার সব মামলায় জামিন রয়েছে। কোনও মামলায় যদি দোষী সাব্যস্ত হন তাহলে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অযোগ্য হবেন তিনি। সেনাবাহিনী এখন আমাকে এক রকম হুমকি বিবেচনা করছে। এবং এটিই সমস্যা। আমার জীবন অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি হুমকির মুখে রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার কিংবা গুপ্তহত্যার চেষ্টার প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমি মনে করি, অত্যন্ত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। আর এই প্রতিক্রিয়া সারা পাকিস্তানজুড়ে দেখা যাবে।

গত বছরের নভেম্বরে পিটিআইয়ের এক সমাবেশে আততায়ীর গুলিতে আহত হয়েছিলেন ইমরান খান। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এবং দেশটির সরকার তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। অন্যদিকে, দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ নেতৃত্বাধীন সরকার ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলায় কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দেশটির রাজনীতিতে বরাবরই আড়ালে থেকে ভূমিকা রাখে। দেশটির ৭৫ বছরের ইতিহাসের প্রায় অর্ধেক সময়ই শাসন করেছে সেনাবাহিনী। তবে পাক সেনাবাহিনী বলেছে, পাকিস্তানের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান নিরপেক্ষ। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযানের সময় কয়েক ডজন পিটিআই সমর্থক আহত হয়েছেন।