বাংলাদেশ থেকে এডিবির একজন সহ-সভাপতি করারও আহ্বান প্রধানমন্ত্রী

শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবির কাছ থেকে আরো সহায়তা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামোর ওপর জোর দিচ্ছে। এ সময় তিনি বিভিন্ন প্রকল্পে, প্রধানত, শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অবকাঠামো খাতে আরো সহায়তা কামনা করেন।স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য উপবৃত্তি ও মিড-ডে মিল সম্পর্কিত কর্মসূচির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে এডিবিকে এই ব্যাপারে সহায়তার জন্য এগিয়ে আসতে বলেন। বাংলাদেশ থেকে এডিবির একজন সহ-সভাপতি বাছাই করারও আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। এই আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংককে সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য, বিশেষ করে দুঃসময়ে ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

আজ (১৪ মার্চ) মঙ্গলবার ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়ার নেতৃত্বে ব্যাংকটির সফররত একটি প্রতিনিধি দলের সৌজন্য সাক্ষাতকালে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, ইআরডি সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিনটিং উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।   

এডিবি প্রেসিডেন্ট মাসাৎসুগু আসাকাওয়া বলেন, এডিবি একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে ১৯৭৩ সাল থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে। এডিবি বাংলাদেশের সাথে আরো নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবে। আগামী দিনগুলোতে আমাদের মধ্যেকার এই অংশীদারিত্ব আরো জোরদার হবে। বাংলাদেশের ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার আকাক্সক্ষার যাত্রায় এডিবি পাশে দাঁড়াবে।  কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন। জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য বজায় রেখে সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

এর আগে, সকালে বাংলাদেশে নিযুক্ত ওমানের রাষ্ট্রদূত আবদুল গাফফার আলবুলুশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে ওমানকে জ্বালানি সহযোগিতা জোরদার, বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং বাংলাদেশ থেকে কৃষিপণ্য আমদানি করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী উপসাগরীয় দেশগুলোকে বাংলাদেশে এলএনজি সরবরাহ প্রতি বছর ১৫ লাখ টন থেকে উন্নীত করতে বলেন।  দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। যে ওমান মাছ, মাংস, চাল, শাকসবজি ও পাটজাত পণ্যসহ কৃষিজাত পণ্য আমদানি করতে পারে। ওমানকে বাংলাদেশ থেকে আইটি বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক ও নার্সসহ দক্ষ কর্মী নিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। 

বর্তমানে ওমানে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। সরকার থেকে সরকার ব্যবস্থার অধীনে ওমান থেকে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করে  রাষ্ট্রদূত আব্দুল গাফফার আলবুলুশি বলেন, ওমানের ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনকে এ বিষয়ে একটি অনুরোধ পত্র পাঠানো হয়েছে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর এমবাসেডার এট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।