| |
               

মূল পাতা জাতীয় ‘আনুপাতিক নির্বাচন হলে বর্তমান অসন্তোষের নিরসন হতে পারে’


‘আনুপাতিক নির্বাচন হলে বর্তমান অসন্তোষের নিরসন হতে পারে’


রহমত নিউজ ডেস্ক     16 January, 2023     10:20 PM    


আনুপাতিক নির্বাচন বলতে কোনো নির্বাচনে একটি দলের পাওয়া মোট ভোটের ভিত্তিতে আসনের বিন্যাস বোঝায়। এ নির্বাচনে আসনভিত্তিক প্রার্থী থাকবে না। বরং দলগুলো নির্বাচনের আগেই প্রার্থীদের একটি তালিকা দেবে। সেখান থেকে আইনসভার সদস্যরা সারা দেশে প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে নির্বাচিত হবেন। দেশের প্রচলিত নির্বাচনব্যবস্থায় সংসদ গঠন না করে আনুপাতিক নির্বাচন হলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বর্তমান অসন্তোষের নিরসন হতে পারে। তবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এখনই আনুপাতিক নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত কি না, তা ভাবার বিষয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া এ বিষয়ে জনমত গড়ে তোলার জন্য রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। 

আজ (১৬ জানুয়ারি) সোমবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সমাজ গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে ‘আনুপাতিক নির্বাচন ও স্থিতিশীল গণতন্ত্র’ বিষয়ে আলোচনা সভায় এসব কথা বলা হয়। সমাজ গবেষণা কেন্দ্রের সদস্যসচিব এম এম আকাশের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্তী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সসহ প্রমুখ।

সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে আনুপাতিক নির্বাচনের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল। তবে, সে সময় বড় কোনো রাজনৈতিক দল তাতে আগ্রহী হয়নি। দেশের নির্বাচন মার্কাকেন্দ্রিক। দেশের মানুষ প্রার্থীর চেয়ে বেশি মার্কায় ভোট দেন। আনুপাতিক হারে নির্বাচন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। বাংলাদেশে আনুপাতিক পদ্ধতি কাজ করবে কি না এবং বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন এত সহজে হবে কি না, সে প্রশ্নও সামনে আসে, আনুপাতিক নির্বাচন হলে মনোনয়ন বাণিজ্য এখনো আছে তখনো হবে। জোরজবর দখল আরো বেশি হবে। তবে স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে এটা শুরু করা যেতে পারে। সংস্কৃতি বদলাতে হবে। তবে আলোচনা শুরু হয়েছে। এটা সার্বিকভাবে আলোচনা করতে হবে। মানুষকে আনুপাতিক নির্বাচন সম্পর্কে জানাতে হবে। তবে আলোচনাটা হওয়া দরকার। রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে আনুপাতিক নির্বাচন করা যাবে না। পাশের দেশ নেপালে এ ধরনের নির্বাচন হয়েছে, বাংলাদেশ কেন পারবে না, সে প্রশ্ন তোলেন। সংসদ সদস্যদের হস্তক্ষেপ স্থানীয় পর্যায়ে অনেক বেশি। দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন হলে এটা হয়। তাই স্থানীয় নির্বাচনে আনুপাতিকের বিষয় ভাবা যায়।

সংসদের ৮০ শতাংশ সদস্যই ব্যবসায়ী, এমন সমালোচনার জবাবে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আগে সংসদ নির্বাচন করার জন্য একটা গোষ্ঠী টাকা দিত, পেশিশক্তির সমর্থন দিত। পরে এই গোষ্ঠী দেখল, তাদের টাকা ও লোক নিয়ে সংসদে বসছেন আরেকজন। তখন থেকে ওই গোষ্ঠী নিজেরাই নির্বাচন করছে। তাদের তিনি ব্যবসায়ী বলতে নারাজ। তারা চুরি করে, লুটপাট করে। তিনি আরও বলেন, দেশে এক ব্যক্তির কথাই আইন হয়ে যায়। তা আওয়ামী লীগ হোক বা বিএনপি। আনুপাতিক নির্বাচন এ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া হতে পারে।

সভায় আনুপাতিক নির্বাচন নিয়ে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন জাতিসংঘের সাবেক উন্নয়ন গবেষণার প্রধান নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আনুপাতিক নির্বাচনের ধারণা ক্রমশ বাড়ছে। বিদ্যমান নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে মানুষের মধ্যে হতাশা ও অসন্তোষ আছে। নির্বাচন নিয়ে অচলাবস্থা ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি অব্যাহত আছে। আনুপাতিক নির্বাচন এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় হতে পারে