আ’লীগের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের দাবিতে ‘রোডমার্চ’ করবে সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা

আওয়ামী লীগ গত নির্বাচনে ইশতেহারে যেসব অঙ্গীকার করেছিল, তা বাস্তবায়নের দাবিতে ৬ ও ৭ জানুয়ারি ঢাকার দিকে রোডমার্চ করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতৃত্বাধীন সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা। দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের নেতাদেরও এসব দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে নাগরিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে দেওয়া অঙ্গীকারের মধ্যে ছিল সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্যবিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইনের দ্রুত বাস্তবায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠন।

আজ (৪ জানুয়ারি) বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত এসব কথা বলেন। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, কাজল দেবনাথ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারি দল নির্বাচনী ইশতেহারে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় যেসব প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছিল, তা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে সুদৃঢ় আন্দোলন করতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়। আশা করেছিলাম, ২০২১ সালের মধ্যে সরকার এ প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করবে। কিন্তু তা না হওয়ায় চলতি বছরের শুরু থেকে ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বাধীন সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের আন্দোলন পরিচালনা করে আসছে। সরকারের কোনো উদ্যোগ না থাকায় সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চা একই দাবিতে আগামী ৬ জানুয়ারি সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকার দিকে রোডমার্চের কর্মসূচি ঘোষণা করছে। আশা করছি, বিপুলসংখ্যক সংখ্যালঘু আদিবাসী জনগণ এতে অংশগ্রহণ করে ৭ জানুয়ারি ঢাকার শাহবাগ চত্বরে দুপুর বেলা জমায়েত হবেন এবং সেখান থেকে বিকেল ৪টার দিকে পদযাত্রা করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে যাবেন। সেখানে তাঁর বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে। আশা করি, এ স্মারকলিপি আন্তরিকতার সঙ্গে গ্রহণ করবেন এবং সরকারি দলের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নে দ্রুততম সময়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।

তিনি আরো বলেন, রাজনীতির মাঠে ‘খেলা হবে’ বলে একটি ধ্বনি প্রধান দলগুলোর মধ্যে বারংবার উচ্চারিত হচ্ছে আমরা লক্ষ করছি। এ ধ্বনি এ দেশের ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘুদের শঙ্কিত করে। কেননা, অতীতের প্রায় সব নির্বাচনে এ দেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে খেলা হয়েছে, যে কারণে নির্বাচনের পূর্বাপর সময়ে অহেতুক এরা নির্যাতিত হয়েছে। এমনতরো পরিস্থিতিতে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় এবং অস্তিত্বের সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষে ঐক্যমোর্চা গঠন করে মানবাধিকারের আন্দোলন পরিচালনা করা ছাড়া আজ সংখ্যালঘুদের সামনে আর কোনও বিকল্প নেই। এই আলোকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ইতোমধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৩৩টি সংগঠন নিয়ে ‘সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা’ জাতীয়ভাবে গঠন করেছে এবং সারা দেশে এর সম্প্রসারণে উদ্যোগ নিয়েছে।

এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ঢাকা ঢাকা