| |
               

মূল পাতা জাতীয় ফের দাম বাড়লে কারখানাগুলো বিদ্যুৎ বিল দিতে পারবে না


ফের দাম বাড়লে কারখানাগুলো বিদ্যুৎ বিল দিতে পারবে না


রহমত নিউজ ডেস্ক     22 November, 2022     11:24 AM    


পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন দর ঘোষণা করা হয়েছে। খুচরা গ্রাহক পর্যায়ে আপাতত দাম বাড়ছে না। তবুও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রভাব পোশাক খাতে পড়বে। এজন্য তারা ভোক্তা বা খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেওয়ার পাশাপাশি বকেয়া অর্থ উত্তোলনের আহ্বান জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই মুহূর্তে বিদ্যুতের দাম বাড়ালে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে, মানুষের মধ্যে হাহাকার সৃষ্টি হবে। অন্যদিকে পোশাক খাত গভীর সংকটে পড়বে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। সোমবার (২০ নভেম্বর) পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রতিক্রিয়ায় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর নেতারা এসব কথা জানান।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইতোমধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট বেড়েছে। বাড়তি দামেও আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে জেনারেটর দিয়ে কারখানা চালাচ্ছি। ফলে উৎপাদন খরচে দিন দিন বাড়ছে। এখন নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ালে আমাদের উৎপাদন খরচ বাড়বে। এতে বিশ্ব বাজারের প্রতিযোগিতায় আমাদের টিকে থাকা কষ্টকর হবে। পাশাপাশি জিনিসপত্রের দাম হু হু করে আরও বাড়বে। জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে। জুলাই থেকে পোশাকের অর্ডার ও দাম কমছে। নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ালে বিশ্ব বাজারে আমাদের বড় ধরনের সমস্যা হবে। আমরা অর্ডার হারাতে চাই না। পাওয়ার গ্রিড, তিতাস বিদ্যুৎ ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিগুলোকে অবৈধ লাইন কেটে দেওয়ার পাশাপাশি মিটারের কারসাজি বন্ধ করার আহ্বান জানান। তাতে সরকারের অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে এবং অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যুক্ত হবে।

পোশাক মালিকদের আরেক সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হাতেম বলেন, পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১ টাকা ৩ পয়সা বাড়ানো হয়েছে। খুচরা পর্যায়ে না বাড়ালেও বাজারে এর প্রভাব পড়বে। তাই সরকারকে অনুরোধ করব খুচরা পর্যায়ে যাতে না বাড়ানো হয়। যদি খুচরা পর্যায়ে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। তবে উৎপাদন খরচ বাড়বে। তাতে বর্তমানে কারখানাগুলো যে বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছে, আগামীতে এটাও দিতে পারবে না। কারণ এমনিতেই বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্য সংকটে রয়েছি।

সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে  পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের প্রতি কিলোওয়াট ৫ টাকা ১৭ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ টাকা ২০ পয়সা নতুন দর ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি। অর্থাৎ প্রতি কিলোওয়াটে ১ টাকা ৩ পয়সা করে বেড়েছে। শতাংশের হিসাবে ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ বেড়েছে। আগামী বিল মাস ডিসেম্বর থেকেই নতুন এই মূল্য কার্যকর হবে। চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বিদ্যুতের পাইকারি দাম পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব জমা দেয় পিডিবি। এরপর ১৮ মে তাদের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি করা হয়েছে। এরপর সবশেষ ১৩ অক্টোবর দাম না বাড়ানোর ঘোষণা দেয় কমিশন। তবে কমিশন সে সময় এই প্রস্তাবের বিপরীতে রিভিউ করার সুযোগ রেখে দেয় পিডিবির জন্য। আর সেই সুযোগ নিয়ে পিডিবি গত সপ্তাহে রিভিউ আপিল করে। এক সপ্তাহের যাচাই-বাছাই শেষে আজ নতুন সিদ্ধান্ত জানানো হলো।

জানা গেছে, এই দাম পুনর্নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভর্তুকি ধরা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ দাম বাড়ানোর পরও বিদ্যুতের উৎপাদন পর্যায়ে ভর্তুকি ১৭ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেবে সরকার। সর্বশেষ ২০২০ সালে ২৭ ফেব্রুয়ারি আরেক দফা বাড়ানো হয় বিদ্যুতের দাম। পাইকারি, খুচরা ও সঞ্চালন- এই তিন পর্যায়ে তখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়। সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা করা হয়। যা আগে ছিল প্রতি ইউনিট ৬ টাকা ৭৭ পয়সা। পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিট গড়ে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়িয়ে ৫ টাকা ১৭ পয়সা করা হয়। যা আগে ছিল প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ৭৭ পয়সা। এ ছাড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন মূল্যহার বা হুইলিং চার্জ প্রতি ইউনিটে ০ দশমিক ২৭৮৭ টাকা থেকে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়িয়ে ০ দশমিক ২৯৩৪ টাকা করা হয়ে। ওই বছরের ১ মার্চ থেকে কার্যকর করে বিইআরসি।