| |
               

মূল পাতা জাতীয় যুবসমাজ জাতির প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে : প্রধানমন্ত্রী


যুবসমাজ জাতির প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে : প্রধানমন্ত্রী


রহমত নিউজ     01 November, 2022     11:51 AM    


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেশের অদম্য যুবসমাজ জাতির প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তে বীরত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এ দেশের যুবদের বুকে অদম্য শক্তির যে বহ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে গেছেন, মানুষের জন্য কাজ করার যে প্রেরণা তিনি যুগিয়েছেন, সেই প্রেরণা নিয়ে এদেশের যুবসমাজ মাথা উঁচু করে সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে- এ প্রত্যাশা করি। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ‘জাতীয় যুব দিবস পালিত হচ্ছে বলে তিনি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘প্রশিক্ষিত যুব উন্নত দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। এ উপলক্ষে তিনি বাংলাদেশের তারুণ্যদীপ্ত যুবসমাজকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।  আজ (১ নভেম্বর) মঙ্গলবার ‘জাতীয় যুব দিবস-২০২২’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে সর্ব্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে লাল-সবুজের একটি নতুন দেশ সৃষ্টি করে এদেশের যুবসমাজ। যুবদেরকে তিনি সংগঠিত করেছিলেন দেশপ্রেমের মহান দীক্ষায়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা অর্জনের পর দেশ পুনর্গঠনেও যুবসমাজকে কাজে লাগান এবং শিক্ষিত ও কর্মদক্ষ যুবসমাজ সৃষ্টিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন ও রূপরেখা প্রণয়ন করেন। পঁচাত্তরের পনেরই আগস্ট স্বাধীনতা বিরোধীচক্র জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর বাংলাদেশের যুবসমাজকে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলার পথে ঠেলে দেয়ার অপচেষ্টা চালায়।আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে যুবসমাজকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে দেশব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকে যুবসমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে উন্নীত করার লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন কারিগরি, বৃত্তিমূলক এবং কৃষিভিত্তিক বহুমুখী প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে।

তিনি বলেন, আমাদের সরকার প্রশিক্ষিত যুবদেরকে জামানতবিহীন যুবঋণ দিয়ে তাদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। যুবদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ দিয়ে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে প্রবাসেও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা হয়েছে। আমরা ‘যুব কল্যাণ তহবিল আইন-২০১৬’ প্রণয়ন করেছি। এ তহবিলের আওতায় এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৬৬৮টি যুব সংগঠনকে ২৭ কোটি ৭৭ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা প্রকল্প ভিত্তিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠনগুলোকে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে ‘যুব সংগঠন নিবন্ধন এবং পরিচালনা আইন-২০১৫’ ও ‘যুব সংগঠন বিধিমালা-২০১৭’, প্রণয়ন করা হয়েছে। যুবসমাজের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ‘জাতীয় যুব কাউন্সিল বিধিমালা-২০২১’, ‘জাতীয় যুব নীতি-২০১৭’, ‘ইয়ুথ অ্যাকশন প্ল্যান’, ‘ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স’ ও ‘যুব উদ্যোক্তা নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, যুবদের সামাজিক বৃদ্ধি, নেতৃত্ব সৃষ্টি, প্রতিভা বিকাশ, ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সাভারে ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জাতীয় যুব কাউন্সিল গঠনের কাজ চলমান রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যুবসমাজ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এই জনমিতিক সুবিধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার-২০১৮ এ যুব সম্পর্কিত অঙ্গীকার ‘তারুণ্যের শক্তি, বাংলাদেশের সমৃদ্ধিকে বিবেচনায় নিয়ে যুবদেরকে উৎপাদনশীল কর্মকান্ডে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করতে নতুন নতুন প্রশিক্ষণ কোর্স, প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে এবং প্রতি উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ ও বিনোদন কেন্দ্র স্থাপনের প্রকল্প নেয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, সরকার যুবদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্বদানে সক্ষম করে গড়ে তোলার জন্য ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করতে সারাদেশে হাই-টেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ও বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন করছে। আমরা চাই আমাদের যুবদেরকে দেশপ্রেম, মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক সচেতন নাগরিকরূপে গড়ে তুলতে। ‘জাতীয় যুব দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।