বিএনপি সারাদেশে নিজেরা নিজেরা মারামারি করে : তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনো শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কেউ বাধা দিক, সেটি আমরা কখনো সমর্থন করি না। কিন্তু আপনারা জানেন যে বিএনপি সারাদেশে নিজেরা নিজেরা মারামারি করে। গতকাল চট্টগ্রামে তারা নিজেরা চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ি করে নিজেদের সমাবেশে গন্ডগোল করেছে। ক’দিন আগে মিরপুরে আমাদের একটা মিছিলের ওপর হামলা পরিচালনা করেছে। বনানীর ঘটনা তদন্তাধিন, তদন্তে বেরিয়ে আসবে আসলে কি ঘটেছিল। শান্তিপূর্ণ কোনো সমাবেশে কেউ বাধা দিক সেটি আমরা চাই না। কিন্তু বিএনপি যদি মানুষের ওপর হামলা পরিচালনা করে, পুলিশের ওপর হামলা পরিচালনা করে, সেই ক্ষেত্রে পুলিশ বা জনগণ কেউই বসে থাকতে পারে না।

আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) সোমবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘মুজিববর্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল, গ্রন্থকার সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম সবুজ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শুকুর আলী শুভ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও গণমাধ্যমে ভুল ও অসত্য তথ্য-উপাত্ত সরবরাহের দায়ে দন্ডিত, তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রণীত কোনো বক্তব্য বা প্রতিবেদনই সঠিক হয় না। কোনো বিশেষ সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন পাঠানোর পর যদি কোনো রিপোর্ট তৈরি হয়, তবে সেটি হচ্ছে ‘ফর ডিমান্ড’। আমরা দেখেছি, ‘অধিকার’ এবং আরো ক’টি প্রতিষ্ঠান থেকে দেয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তৈরি রিপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন জন ‘কনসার্ন’ ব্যক্ত করেছেন। বাস্তবতা হলো বাংলাদেশে যারা গুম হয়েছিল বলে ক’দিন আগে একটা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল, এরমধ্যে ১০ জন ফেরত এসেছে, আর ২০ জন হত্যাসহ বিভিন্ন দাগী আসামি। তারা নিশ্চয় অনেকে পালিয়ে আছেন। আবার কিছু কিছু গুম যখন হয়েছে, তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তালিকার মধ্যে তাদের নামও রয়েছে। অধিকার নামের সংগঠন হেফাজতের আন্দোলনের সময় শতশত হেফাজতকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল বলে অন্য দেশের ছবি দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং আল জাজিরাসহ নানা গণমাধ্যমে সরবরাহ করেছিল। পরে তারা শতশত থেকে নেমে এসে বলেছিল ৬১জন। কিন্তু কারো নাম বা পরিচয় দিতে পারেনি। এসব বানোয়াট তথ্যের কারণে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল, গ্রেপ্তারও হয়েছিল। সেই সংগঠনের দেয়া গুম-খুনের তথ্য-উপাত্তও ত্রুটিপূর্ণ। জাতিসংঘ কোন্ সূত্র থেকে তথ্য নিচ্ছে, সেটিই হচ্ছে বড় বিষয়।

তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশে মানবাধিকারের চরম লংঘন হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সেই নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি ও তা আইনে রূপান্তর করে। মানবাধিকারের চরম লংঘন হয়েছে, যখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতাকে নিষ্কন্টক করার জন্য বিনা বিচারে হাজার হাজার সেনাবাহিনীর অফিসার এবং জওয়ানকে হত্যা করেছে, খালেদা জিয়ার সময় ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা হয়েছে এবং সেটার জন্য গাঁজাখুরি তদন্ত কমিশন করে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে যে, ইসরাইলের মোসাদ এই কাজ করেছে। সেই মামলায় তারেক জিয়ার শাস্তি হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, অনেকের ফাঁসি হয়েছে। ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছে এগুলো তো মানবাধিকারের চরম লংঘন। মানুষের অধিকারের চরম লংঘন। এগুলোও প্রতিবেদনে আসা উচিত।