| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছে’


‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছে’


রহমত ডেস্ক     31 May, 2022     02:53 PM    


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকার বিগত ১৩ বছর ধরে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশ পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করার চেষ্টা করে যাচ্ছে । নিজেদের ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রাখতে তারা দেশকে মেধাহীন করার সব ব্যবস্থা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন একটি স্বাভাবিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এসব ঘটনায় ক্ষমতাসীন দল এবং এর সহযোগী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের নাম প্রমাণসহ উঠে আসার পরও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে উপরন্তু প্রমাণিত সত্যকে অস্বীকার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সরকারের আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছে। জাতির মনন গঠনের কারিগর শিক্ষকদের দলদাসে পরিণত করা হয়েছে। যেসব সম্মানিত শিক্ষক নিরপেক্ষভাবে সত্যিকারের শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি এবং শিক্ষাদানের চেষ্টা করছেন তাদের বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে।

আজ (৩১ মে) মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে ডাকসু’র সাবেক নেতাদের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনিএসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— ডাকসুর সাবেক ভিপি আ স ম আব্দুর রব, আমানউল্লাহ আমান, নুরুল হক নূর, সাবেক জিএস খায়রুল কবির খোকন এবং সাবেক এজিএস নাজিমউদ্দিন আলম।

মান্না বলেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে সরকারি দলের সহযোগী ছাত্র সংগঠনকে একটি সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত করেছে। ১৩ বছর ধরে ভিন্ন রাজনৈতিক মতের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে অবস্থান তো দূরের কথা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পাঠ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এমনকি পরীক্ষা পর্যন্ত দেওয়ার সুযোগ পায় না। সরকারি দলের সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন চর দখলের মতো করে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় দখল করে রেখেছে। ভিন্ন মত পোষণ এমনকি কেবলমাত্র সরকারি দল বা তাদের সহযোগী সংগঠনের কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় নির্মম শারীরিক নির্যাতন, হল থেকে বের করে দেওয়া এমনকি পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে বারংবার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের দলদাস নির্লজ্জ প্রশাসন বরাবরই নির্লিপ্ত থেকেছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ১৩ বছর ধরে বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রতিনিয়ত ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠনের হামলার শিকার হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ গত ২৪ এবং ২৬ মে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। তারা মধ্যযুগীয় কায়দায় নিষ্ঠুরভাবে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছে। এমনকি তারা কাপুরুষোচিতভাবে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর হামলা চালিয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের ওপর এমন নির্মম হামলার ঘটনা পাকিস্তান আমলেও কখনো ঘটেনি। হামলার শিকার এসব বিরোধী ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা বর্তমানে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে রয়েছেন। নারী শিক্ষার্থীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ হামলায় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছে, যা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছবি এবং ভিডিওসহ উঠে এসেছে। এ হামলায় জড়িতদের নাম-পরিচয়, হামলা এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ছবি, ভিডিও সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হলেও দলদাস বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমনকি ঘটনার বিষয়ে জানেন না বলেও মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অযোগ্য উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ ঘটনায় হামলার শিকার ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলকে দায়ী করেছেন, এমনকি মামলাও করেছেন।