| |
               

মূল পাতা জাতীয় শ্বেতপত্র ইসলামবিরোধী নয় বলে দাবি ঘাদানিকের


শ্বেতপত্র ইসলামবিরোধী নয় বলে দাবি ঘাদানিকের


রহমত ডেস্ক     22 May, 2022     08:09 AM    


দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম  বিরোধিতা করা সত্ত্বেও শ্বেতপত্র ইসলামবিরোধী নয় বলে দাবি করছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি (ঘাদানিক)। ঘাদানিক বলছে, গণকমিশনের বিরুদ্ধে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির মূল বক্তব্য হচ্ছে- বর্তমান শ্বেতপত্র ইসলামবিরোধী। আমরা এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলতে চাই- আমাদের শ্বেতপত্র কখনো ইসলামবিরোধী নয়।

শনিবার (২১ মে) রাজধানীর মহাখালীতে অস্থায়ী কার্যালয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এবং জাতীয় সংসদের আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক ককাসের যৌথ উদ্যোগে গঠিত 'মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশন' শীর্ষক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। 

আজকের সভায় বলা হয়- 'বাংলাদেশে মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন' শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি কমিশনের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে যেমন অভিনন্দন জানিয়েছেন, এর বিপরীতে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি- বিশেষভাবে জামায়াতে ইসলামী, হেফাজতে ইসলাম এবং সমচরিত্রের সংগঠনগুলো এই শ্বেতপত্রকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে কমিশনের সদস্যদের প্রতি অশ্লীল ও কদর্য ভাষায় বিষোদগার করছে। বাংলাদেশে যা কিছু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমার্থক তার প্রতি জঙ্গি মৌলবাদীদের এ ধরনের বিষোদগার নতুন কোনো বিষয় না হলেও তারা যেভাবে কমিশনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের মে মাসের মতো রাজপথে নেমে তাণ্ডবের হুমকি দিচ্ছে, যেভাবে রাস্তায় মিছিল করছে, তাতে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের চলমান ধারা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে বলে আমরা মনে করি। জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণকমিশনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে মাঠে নামার পাঁয়তারা করছে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।

 সভায় বলা হয়, 'গণকমিশনের বিরুদ্ধে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির মূল বক্তব্য হচ্ছে- বর্তমান শ্বেতপত্র ইসলামবিরোধী। আমরা এ বিষয়ে স্পষ্টভাবে বলতে চাই- আমাদের শ্বেতপত্র কখনো ইসলামবিরোধী নয়। কমিশনে এবং এর সচিবালয়ে ইসলামিক চিন্তাবিদ আলেম ওলামারা যেমন আছেন অন্যান্য ধর্মের নেতারাও আছেন। আমাদের শ্বেতপত্রে ওয়াজের নামে ধর্মব্যবসায়ী তথাকথিত আলেমরা ভিন্নধর্ম, ভিন্নমত এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনার বিরুদ্ধে কী বলেছেন, হেফাজত-জামায়াতের নেতারা কোন কোন জঙ্গি সন্ত্রাসী বলয়ের সঙ্গে যুক্ত, কীভাবে জঙ্গিবাদের অর্থায়ন হচ্ছে, ওয়াজ ব্যবসায়ীদের আয়ের স্বচ্ছতা ইত্যাদি বিষয়ে বলা হয়েছে, যার সঙ্গে ইসলাম ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই। জামায়াতে ইসলামী ৭১ সালে তাদের যাবতীয় মানবতাবিরোধী অপরাধকে ইসলামের নামে বৈধতা দিতে চেয়েছে এবং ইসলামের নামে তারা গণহত্যা ও নারীধর্ষণ করেছে। জামায়াত-হেফাজতের জাতি ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের সমালোচনা কখনো ইসলামবিরোধী হতে পারে না। আমরা আবারও সরকারের নিকট দাবি জানাচ্ছি- বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য যারা ভেঙে বুড়িগঙ্গায় ফেলার ঘোষণা দিয়েছে, যারা প্রতিনিয়ত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বাংলাদেশের সংবিধানের বিরুদ্ধে কদর্য ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছে তাদের কঠোরভাবে দমন করা না হলে তারা দেশ ও জাতির জন্য সমূহ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে।'

কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের সদস্য রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সংসদের সদস্য হাসানুল হক ইনু, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মাদ আলী শিকদার, হাফেজ মাওলানা জিয়াউল হাসান, কমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার ড. তুরিন আফরোজ, কমিশনের সচিবালয়ের সমন্বয়কারী কাজী মুকুল, সদস্য অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবু, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, সাংবাদিক আবু সালেহ রনি ও মাওলানা হাসান রফিক প্রমূখ।