| |
               

মূল পাতা জাতীয় সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে একটি আধুনিক মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী


সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে একটি আধুনিক মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী


রহমত ডেস্ক     31 March, 2022     08:09 PM    


বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের মতো ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত- সমৃদ্ধ দেশগঠনে সকলের সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে তাদের একটি আধুনিক মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।  সরকার সারাদেশের আইনজীবীদের জন্যে আরো ভালো ব্যবস্থা করার কথা ভাবছে, যেরকম ৬৪টি জেলা আদালতের সবকটির আধুনিকায়ন করা হয়েছে। সরকার আইনজীবীদের জন্যে বার কাউন্সিল ভবন নির্মাণ করছে। যারা বিচার চাইতে অপারগ তাদের আইনী সেবা দিতে সরকার ‘দ্যা লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস অ্যাক্ট- ২০০০’ প্রণয়ন করেছে। অনেক বাধাবিপত্তি মোকাবেলা করে তাঁর সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে।

আজ (৩১ মার্চ) বৃহস্পতিবার সকালে নগরীর সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গণে  বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নব-নির্মিত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১২ তলা ভবন ‘বিজয় একাত্তর’ উদ্বোধনকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের নব-নির্মিত ১২ তলা ভবনের একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং এটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ আমিন উদ্দীন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার স্বাগত বক্তব্য রাখেন। সাবেক প্রধান বিচারপতি, সুিপ্রম কোর্টের বিচারপতি এবং বিশিষ্ট আইনজীবীগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ বাস্তবায়নের জন্য গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিচার বিভাগের জন্য আলাদা বাজেট বরাদ্দ করেছে এবং বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার জন্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন করেছে। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিচার বিভাগকে আরো শক্তিশালী করতে এবং সংবিধানের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। দেশের সংবিধান লঙ্ঘন করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সরকারগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়ার জন্য বিচারপতিদের সাধুবাদ জানান। সরকার গণতন্ত্রকে নিরাপদ এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে গণতন্ত্রক সুরক্ষা এবং দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, যাতে জনগণ ন্যায়বিচার পায়। নির্যাতিত নারী, শিশু এবং এসিড হামলার শিকারসহ সকলে যাতে সুবিচার পায় আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, এই রায়ে বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডের এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে জনগণকে দায়মুক্তির সংস্কৃতি থেকে মুক্তি দিয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আমরা দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছি।  বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের সরকার দায়মুক্তির সংস্কৃতি চালু করে। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদের দায়মুুক্তি দিয়ে পুরস্কার হিসেবে তাদের বিদেশী মিশনসমূহে নিয়োগ দেন এবং একইসঙ্গে জেল থেকে মুক্ত করে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়াও স্বামীর পথ অনুসরণ করেন। বিচারকদের সাহসী ভূমিকার কারনে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি এবং রায় বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের রায় দেয়ায় নিম্ন ও উচ্চ আদালতের বিচারকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।

ছয় বছরের জোরপূর্বক নির্বাসিত জীবনের পর দেশে ফেরার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের কারণে তখন এমনকি তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের হত্যাকান্ডের জন্যে একটি মামলা দায়ের করতেও পারেননি। পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পথ ধরে জিয়া অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসেন। আর জিয়াউর রহমানের পথ ধরে ক্ষমতায় আসেন এরশাদ। জিয়ার শাসনকালে প্রায় ১৯ থেকে ২০ বার অভ্যুত্থান ঘটে এবং এর শিকার হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনগণ।

প্রয়োজনীয় আইন চালুসহ অবকাঠামো নির্মাণ, বিচারকদের বেতন বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাক এবং জনগণ ন্যায় বিচার পাক। সরকার বিচার বিভাগের ডিজিটালাইজেশন সম্পূর্ণ করতে তাঁর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধানে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। দেশজুড়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সরকারের উদ্যোগের অংশ হিসেবে তারা একটি ‘ল ইউনিভার্সিটি’ প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে। এই ইউনিভার্সিটির জন্যে একটি যথাযথ শিক্ষানীতি প্রণয়নে বিচারক ও আইনজীবীদের সহায়তা প্রয়োজন হবে। তিনি ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রীকে আদালত সংক্রান্ত নথি নিরাপদে রাখতে একটি রেকর্ড রুম তৈরিতে অর্থ বরাদ্দ দিতে বলেছেন। হার্ড কপি ও সফট কপি নথি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।