| |
               

মূল পাতা জাতীয় গণতন্ত্র সুসংহত করতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অপরিহার্য : সিইসি


গণতন্ত্র সুসংহত করতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অপরিহার্য : সিইসি


রহমত ডেস্ক     22 March, 2022     05:42 PM    


নির্বাচনে আস্থা ফেরাতে ও মানুষকে নির্বাচনমুখী করতে বিশিষ্টজনদের সহযোগিতা চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, গণতন্ত্র সুসংহত করতে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অপরিহার্য। ১০০ শতাংশ সফলতা হয়তো কখনো সম্ভব না, কেউ বলেছেন এটা যদি ৫০ শতাংশ বা ৬০ শতাংশ গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে এটাও একটা বড় সফলতা। দেশের নির্বাচন নিয়ে বিবর্তনটা ইতিবাচক হয়নি। সহিংসতা ব্যাপকতা লাভ করে। এটা হলে পরে ভোটাররা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ভোট দিতে পারে না। আপনারাও বলেছেন সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে। বিগত নির্বাচনে বেশকিছু কারণে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, কেউ বলছে ভোট দিচ্ছে না। তবে নারায়ণগঞ্জের ইলেকশন খুব সুন্দর হয়েছে। ইভিএমের মাধ্যমে এটা একটা ভালো দিক। এটা সত্য কথা আমাদের সাহস থাকতে হবে। সাহসের পেছনে থাকতে হবে সততা। আমাদের হারানোর কিছু নাই। পাওয়ার কিছুও নাই। জীবনের শেষ প্রান্তে আমরা ইতিবাচক যদি কিছু করতে পারি, আপনাদের সাজেশনের আলোকে নির্বাচনটা যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায় সবার অংশগ্রহণে, সেটা একটা সফলতা হতে পারে।

আজ (২২ মার্চ) মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে সংলাপে বসে নির্বাচন কমিশন। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরির জন্য দেশের সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপের শুরুতে উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপে মতামত দেওয়ার জন্য ৩৯ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এতে অংশ নিয়েছেন ১৭ জন।  এর আগে গত ১৩ মার্চ ৩০ জন শিক্ষাবিদের সঙ্গে সংলাপের আয়োজন করেছিল ইসি। যদিও ইসির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ওইদিন উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১৩ জন। আগামী ৩০ মার্চ গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি। এরপর নারী নেত্রী ও দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে বৈঠকে বসবে ইসি।

সিইসি বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমের বিপক্ষে অনেকেই বলেছেন। এটার মধ্যে কোনো অসুবিধা আছে কি না, এটা ব্যবহারে অনেকেই অভ্যস্ত নয়। মেশিনের মাধ্যমে কোনো ডিজিটাল কারচুপি হয় কি না, পৃথিবীর অনেক দেশ ইভিএম বাতিল করে দিয়েছে, কেন করলো সেটা গবেষণা করা উচিত। ইভিএমে রিকাউন্টিং প্রবলেম আছে, যদি কোনোরকম কারচুপি হয়ে থাকে, তাহলে রিকাউন্টিং করা যাবে কি না, এটার কোনো ব্যবস্থা আছে কি না, এটা আমাদের বুঝতে হবে। আমাদের টেকনিক্যাল কমিটির মিটিং করে একটা ধারণা নিতে হবে। নির্বাচনে যেন ধর্মের ব্যবহার না হয়, সেটাও আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখবো। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড একটা কষ্টসাধ্য কাজ। আমাদের চেষ্টা করতে হবে। আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই আমরা চেষ্টা করবো। ভোটার সেন্টারে যেতে পারবে কি না? ভোটার তার সেন্টার থেকে বের হয়ে নিরাপদ কি না? এটা ওসি ডিসিদের মাধ্যমে ওই জায়গাটা দেখতে পারলে ভালো হয়।

সংলাপে যারা উপস্থিত হয়েছেন : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সেন্টার ফর আরবান স্টাডিজ-সিইউএস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইনডিজিনিয়াস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ, নিজেরা করি’র কো-অর্ডিনেটর খুশি কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস, লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. সিনহা এম এ সাঈদ, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক বেগম শাহীন আনাম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডির ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান, গভর্নেন্স অ্যান্ড রাইট সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ড. জহুরুল আলম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ হাফিজুর রহমান। বৈঠকে সিইসি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান, বেগম রাশেদা সুলতানা ও মো. আলমগীর, ইসি সচিসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জানা গেছে, বর্তমান আউয়াল কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোকে আস্থায় আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার অংশ হিসেবে এসব বৈঠকের আয়োজন করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম সংলাপে একগুচ্ছ প্রস্তাবনা পেয়েছে ইসি। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— ভোটার ও বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে ইভিএম ব্যবহার, দলগুলোর সব স্তরের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য পদ পূরণে ব্যবস্থা নেওয়া, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ, নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোকে ইসির অধীন রাখা ইত্যাদি।