| |
               

মূল পাতা আন্তর্জাতিক উপমহাদেশ কোনোদিন ‘গাজওয়া-ই-হিন্দ’র স্বপ্ন সত্যি হবে না : যোগী


কোনোদিন ‘গাজওয়া-ই-হিন্দ’র স্বপ্ন সত্যি হবে না : যোগী


আন্তর্জাতিক ডেস্ক     14 February, 2022     03:24 PM    


ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এটি নতুন ভারত। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নতুন ভারত এটি। নতুন এই ভারতে সবার জন্য উন্নয়ন করা হবে এবং কারও তোষামোদের রাজনীতি করা হবে না।  নতুন ভারত চলবে সংবিধান অনুযায়ী, শরীয়ত আইন অনুযায়ী নয়। ‘গাজওয়া-ই-হিন্দ’ স্বপ্ন কোনোদিন সত্যি হবে না। নতুন এই ভারত সংবিধান অনুযায়ী চলবে, শরীয়ত অনুযায়ী নয়। আমি পরিষ্কার করে এটিও বলতে চাই যে, ‘গাজওয়া-ই-হিন্দ’ (চূড়ান্তভাবে ভারত জয়ের) স্বপ্ন কিয়ামত পর্যন্ত সত্যি হবে না। তিন তালাক প্রথা তুলে দিয়ে নারীদের স্বাধীনতা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের মেয়েদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে আমরা বলি, প্রশাসন সংবিধান মেনে চলবে, শরীয়ত আইন মেনে নয়।

আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি) সোমবার ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআইয়ে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে চলমান বিধানসভা নির্বাচনে সোমবার দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নিজ রাজ্যের নির্বাচন এবং দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের চলমান হিজাব বিতর্কের মধ্যেই যোগী আদিত্যনাথ বিতর্কিত এই মন্তব্য করলেন।

এর আগে কর্ণাটকের হিজাব বিতর্কে উত্তেজনার পারদ বৃদ্ধির মধ্যেই রবিবার এ বিষয়ে জোরালো মন্তব্য করেন সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন-এআইএমআইএম প্রধান এবং হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী রাজনীতিক আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে হিজাব পরিহিতা নারীই হবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের সমভল জেলায় নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেওয়া বক্তব্যের একটি ভিডিও নিজের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্টেও শেয়ার করেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। ভিডিওতে হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী এই রাজনীতিককে বলতে শোনা যায়, ‘হিজাব পরিহিতা মেয়েরা চিকিৎসক হচ্ছেন, জেলা প্রশাসক হচ্ছেন, মহকুমাশাসক হচ্ছেন। তারা একদিন দেশের প্রধানমন্ত্রীও হবেন।’ এআইএমআইএম প্রধানের এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এছাড়া হিজাব ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারেরও ব্যাপক সমালোচনা করেন তিনি।

আসাদউদ্দিন ওয়াইসির ওই বক্তব্যের একদিনের মাথায় পাল্টা এই মন্তব্য করলেন যোগী আদিত্যনাথ। পরে সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে এ বিষয়ে সিরিজ টুইট করেন উত্তরপ্রদেশের এই মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার সকালে পোস্ট করা এসব বার্তায় তিনি বলেন, ‘ যারা গাজওয়া-ই-হিন্দ-এর স্বপ্ন দেখেন, তালেবানি চিন্তাধারায় ব্যস্ত থাকেন, তাদের এটি বুঝতে হবে... ভারত সংবিধান অনুযায়ী চলবে, শরীয়ত অনুযায়ী নয়...!’ তবে রবিবার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার মুসলিম নারী ও মেয়েদের হিজাব পরতে দেয় না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘তিনি (মোদি) নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বলেন। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’-এর প্রচার করেন। তিন তালাক নিষিদ্ধ করেন। হিজাব পরা নিষিদ্ধ করে বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াওয়ের প্রচার করছেন উনি?’

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কর্ণাটকের বিভিন্ন স্কুল কলেজে একদিকে হিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতির দাবিতে আন্দোলন করছে মুসলিম ছাত্রীরা। অন্যদিকে হিন্দু শিক্ষার্থীরা গেরুয়া ওড়না পরে হিজাববিরোধী আন্দোলন শুরু করেছে। কর্ণাটকের স্কুল-কলেজে হিজাব পরা মুসলিম মেয়েদের ঢুকতে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক শুরু হয়েছিল, তা বর্তমানে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যটির সীমানা ছাড়িয়ে দেশটির বাকি অংশেও ছড়িয়ে পড়েছে। হিজাবে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে। মুখ খুলেছেন দেশটির বড় বড় রাজনীতিক ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরাও। কর্ণাটকে এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছে গত মাসে উদুপি জেলার সরকারি বালিকা পিইউ কলেজে ছয়জন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারণে শ্রেণিকক্ষের বাইরে বসতে বাধ্য করার পর। সেই সময় কলেজ প্রশাসন জানায়, ইউনিফর্মের অংশ নয় হিজাব এবং ওই ছাত্রীরা কলেজের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। ছাত্রীদের ক্লাসে হিজাব পরার বিষয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় ডানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও তাদের ছাত্র সংগঠন। উদুপির এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যের মান্দিয়া এবং শিভামোগগা এলাকায়। সেখানকার কলেজ কর্তৃপক্ষ হিজাব নিষিদ্ধ করে। যদিও আইনে হিজাব পরে মুসলিম ছাত্রীদের ক্লাসে আসতে কোনও বাধা নেই।