| |
               

মূল পাতা জাতীয় সাংসদ মির্জা আজম চিকিৎসক সমাজকে হেয় করেছেন : বিএমএ


সাংসদ মির্জা আজম চিকিৎসক সমাজকে হেয় করেছেন : বিএমএ


রহমত ডেস্ক     30 January, 2022     11:26 PM    


বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজম চিকিৎসক ও প্রকৌশলীদের ‘চোর হিসেবে’ আখ্যায়িত করার প্রতিবাদ জানিয়েছে চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএ। সংগঠনটির দাবি, মির্জা আজম চিকিৎসক সমাজকে হেয় করেছেন। চিকিৎসকদের নিয়ে তার এই বক্তব্য অশালীন, আপত্তিকর, মানহানিকর, কল্পনাপ্রসূত ও অবমাননাকর। আজ (৩০ জানুয়ারি) রবিবার সংগঠনটির সভাপতি ডা. মােস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও মহাসচিব ডা. মাে. ইহতেশামুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়। এর আগে, জামালপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজমের একটি বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। শনিবার জামালপুর জেলা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তিনি। ভিডিওতে মির্জা আজম বাংলাদেশের প্রকৌশলী ও চিকিৎসকদের ‘চোর হিসেবে আখ্যায়িত’ করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ জানুয়ারি জামালপুরের একটি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য মির্জা আজমের একটি বক্তব্য চিকিৎসক সমাজের গােচর হয়েছে। সভায় তিনি বাংলাদেশের চিকিৎসক ও প্রকৌশলীদের চোর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তার এই বক্তব্য অশালীন, আপত্তিকর, মানহানিকর, কল্পনাপ্রসূত ও অবমাননাকর। আমরা এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল পদে থেকে এ ধরনের বক্তব্য ঐ যুদ্ধে সম্মুখ সমরে দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসক সমাজকে হেয় করেছে। এ দেশের ভাষা আন্দোলন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, ভােট ও ভাতের অধিকার আন্দোলন, স্বৈরাচার বিরােধী আন্দোলনসহ দেশের সব আন্দোলন-সংগ্রামে চিকিৎসক সমাজের অবদান সর্বজনবিদিত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় এযাবৎ যত অর্জন সবই সম্ভব হয়েছে দেশের চিকিৎসক সমাজ ও স্বাস্থ্য কর্মীদের অসাধারণ কৃতিত্বে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী পঞ্চাশ বছরে একমাত্র দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দশটি প্রশংসামূলক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। সমসাময়িক সময়ে ডেঙ্গু রােগ প্রতিরােধে প্রায় ১২ জন চিকিৎসক ও বৈশ্বিক মহামারি করােনা নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসায় ১৯০ জন চিকিৎসক শহীদ হয়েছেন এবং প্রায় তিন হাজারেরও বেশি চিকিৎসকসহ প্রায় নয় হাজার স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের প্রায় সবার পরিবারের সদস্য তাদের মাধ্যমে আক্রান্ত হয়েছেন।

প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সবাকে মহাসচিব মি. বান কি মুন, নােভেল বিজয়ী লরিয়েট মি. অমর্ত্য সেন কিংবা প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যান্সেট যখন তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং চিকিৎসক স্বাস্থ্য কর্মীদের অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন, সেখানে একজন রাজনীতিবিদ অর্বাচীনের মতাে চিকিৎসকদের সব অর্জনকে খাটো করে তাদেরকে চোর বলে বক্তৃতার মঞ্চে শিহরণ সৃষ্টি করেন। এটি কেবলমাত্র অসৎ রাজনীতিবিদের পক্ষেই সম্ভব। আমরা মনে করি এভাবে উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে ওই রাজনীতিবিদ নিশ্চয় ঘােলা পানিতে মাছ শিকার করতে চান। অর্থনীতি ও উন্নয়নের চাকাকে ক্রমাগতভাবে এমনকি মহামারির সময়েও সচল রাখতে এদেশের প্রকৌশলীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। প্রকৌশলী-চিকিৎসকদের কটূক্তি করে মির্জা আজম যে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন, তা নজিরবিহীন। অসত্য তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াসে তিনি সংসদ সদস্য হিসাবে শপথ ভঙ্গ করেছেন। আমরা এই সংসদ সদস্যের দায়িত্বহীন বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহারের জোর দাবি জানাচ্ছি এবং আমরা সরকার প্রধান তথা এদেশের সব মানুষের আস্থার জায়গা প্রধানমন্ত্রীর সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।