রহমত ডেস্ক 28 January, 2022 09:20 PM
বৈশ্বিক মহামারী মরণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের ঊর্ধ্বগতি ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পূর্ব ঘোষিত সম্ভাব্য তারিখে (২৮,২৯,৩০ জানুয়ারি) হচ্ছে না শুরায়ী নেজামের এবারের বিশ্ব ইজতেমা। তবে তাবলিগী সাথীদের অনেকেই পূর্ব ঘোষিত সম্ভাব্য তারিখে টঙ্গী মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে উপস্থিত হয়ে চিল্লার জন্য বের হচ্ছেন। সর্বশেষ ২০২০ সালে টঙ্গীর তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণজমায়েত বিশ্ব ইজতেমা। এরপরের বছর ২০২১ সালের বিশ্ব ইজতেমা বাতিল হয়েছিল করোনাভাইরাসের কারণে। তবে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে তিন চিল্লার সাথীদের জোড় শেষে ঘোষণা করা হয়, সারাদেশে যারা তাবলীগের চিল্লায় আছেন তারা যেন চিল্লা শেষে পূর্ব ঘোষিত সম্ভাব্য তারিখে (২৮,২৯,৩০ জানুয়ারি) ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হন। পূর্বঘোষিত তারিখ অনুযায়ী আজ (২৮ জানুয়ারি) ইজতেমা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সার্বিক পরিস্থিতি মিলিয়ে ইজতেমা হচ্ছে না। তবে সাথীদের অনেকেই মাঠে উপস্থিত হয়েছেন, সেখান থেকে হেদায়েতি বয়ান শুনে চিল্লার জন্য বের হচ্ছেন তারা। আজ ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি জামাত বের হয়েছে। রাত অবধি চিল্লার জন্য জামাত বের হবে বলে জানা গেছে।
আগামী দুইদিনও টঙ্গী ময়দান ও কাকরাইল মসজিদ থেকে চিল্লার জামাতের জন্য সাথীরা বের হবেন। এবার বিশ্ব ইজতেমা না হলেও পূর্ব ঘোষিত সম্ভাব্য তারিখে চিল্লার জামাতের জন্য বের হতে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকাল থেকে টঙ্গী ময়দান ও কাকরাইল মসজিদে আসতে শুরু করেছেন সাথীরা। জামাত বের হওয়ার আগে কাকরাইলের মুরুব্বি মাওলানা রবিউল হক সাথীদের উদ্দেশ্যে হেদায়েতি বয়ান করছেন। সাথীদের উদ্দেশ্যে হেদায়েতি বয়ানে বলা হয়েছে, বিশ্ব ইজতেমার মূল উদ্দেশ্য বিশ্বব্যাপী মানুষের মাঝে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া এবং এর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে বেশি বেশি চিল্লার জামাত বের হওয়া। যেহেতু স্বাস্থ্যবিধির কারণে এবার ইজতেমা হচ্ছে না, তাই মানুষকে আল্লাহর রাস্তায় দাওয়াত দেওয়া ও আল্লাহর রাস্তায় খুরুজ হতে বলা হয়েছে হেদায়েতি বয়ানে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমা প্রতি বছর শীতকালীন সময়- ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তবে ২০২১ সালের শীতকালে বাংলাদেশে করোনা মহামারী সংক্রমণ বাড়ার শঙ্কার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদফতর। পরবর্তীতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আর হয়নি ২০২১ সালের বিশ্ব ইজতেমা। লাখো আল্লাহ প্রেমীর তাকবির ধ্বনিতে প্রতিধ্বনিত হয়নি টঙ্গীর তুরাগ তীর। টঙ্গীতে বৃহত্তম জুমার নামাজের দৃশ্যও দেখতে পায়নি বিশ্ববাসী। ইজতেমাহীন একটি বছর পার করার পর এ বছর ( ২০২২ সালের) বিশ্ব ইজতেমাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। তবে টঙ্গী ময়দান সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর এই ৮ বিভাগে তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে তিন চিল্লার সাথীদের জোড়। অন্য বছরের মতো এবার ঢাকায় জোড়ের জন্য একত্রিত হননি পুরো দেশের তিন চিল্লার সাথীরা । করোনা ওমিক্রণ ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। গত ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জে হয়েছিল রাজশাহী বিভাগের জোড়। সিরাজগঞ্জে তিন চিল্লা সাথীদের এই জোড় শেষ হওয়ার পর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে একসাথে জোড় হয়েছিল ১০, ১১ ও ১২ ডিসেম্বর। দ্বিতীয় ধাপের জোড় শেষে ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ১৭, ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল তৃতীয় ধাপের তিন চিল্লার সাথীদের জোড়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের বিশ্ব ইজতেমা শেষে ২০২১ সালের ইজতেমার (৮ থেকে ১০ জানুয়ারি ইজতেমার প্রথম পর্ব ও ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি ২য় পর্ব) তারিখ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে পরবর্তীতে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আর হয়নি ২০২১ সালের বিশ্ব ইজতেমা। স্বাস্থ্যবিধির প্রতি লক্ষ্য রেখে গত বছর ১৮ জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৩ চিল্লার সাথীদের জোড়।