| |
               

মূল পাতা জাতীয় ৯৯৯ এ মুরাদের বিরুদ্ধে স্ত্রী ডা. জাহানারার ফোন’


‘আমাকে মেরে ফেলবে, আমাকে বাঁচান প্লিজ’

৯৯৯ এ মুরাদের বিরুদ্ধে স্ত্রী ডা. জাহানারার ফোন’


রহমত ডেস্ক     06 January, 2022     07:04 PM    


‘ও (ডা. মুরাদ হাসান) আমাকে নির্যাতন করছে। আমাকে মেরে ফেলবে বলেছে। প্লিজ আমাকে বাঁচান। ও আমাকে মেরে ফেলবে।’  আজ (৬ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার বিকালে আলোচিত-সমালোচিত সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন তারর স্ত্রী ডা. জাহানারা এহসান। পরবর্তীতে ৯৯৯ থেকে বিষয়টি ধানমন্ডি থানা পুলিশকে জানানো হয়। বর্তমানে পুলিশের একটি টিম মুরাদের বাসায় অবস্থান করছে।

পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিকেলে ৯৯৯ এ ফোন করেন মুরাদের স্ত্রী। ফোন ধরেন একজন কনস্টেবল সমমর্যাদার অপারেটর। মুরাদের স্ত্রী তাকে বলেন, ‘আমি ডা. জাহানারা। ধানমন্ডি থেকে বলছি। আমার স্বামী ডা. মুরাদ, এমপি মুরাদ।’ এপাশ থেকে ‘আপনাকে কীভাবে সহযোগিতা করতে পারি’ জানতে চাইলে মুরাদের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী কয়েকদিন ধরেই আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন। কথায় কথায় আমাকে হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার আমি। আমাকে বাঁচান। ও বলেছে আমাকে মেরে ফেলবে। আমাকে ও আমার সন্তানদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। আমার ওপর এখন হাত তুলতে চেয়েছিল। আমাকে আপনারা বাঁচান। আমাকে উদ্ধার করুন। প্লিজ পুলিশ পাঠান, এখনি পুলিশ পাঠান।’

ফোন কলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশে একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, দুপুরে একজন নারী রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে ফোন দেন। ফোন দিয়ে বলেন, তার স্বামী একজন ডাক্তার এবং এমপি। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ের জের ধরে তার স্বামীর সঙ্গে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়েছে। এই পারিবারিক কলহের জেরে তার স্বামী তাকে মারধর করেছে এবং প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। তিনি এখন নিজেকে অনিরাপদ বোধ করছেন, তাই পুলিশি সহায়তা চেয়েছেন। এরপরই ৯৯৯ খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ওই ভিকটিম নারীকে ধানমন্ডি থানার ডিউটি অফিসারের ফোনের সঙ্গে যুক্ত করে দেয়।

ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদের স্ত্রী দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পারিবারিক কলহের জের ধরে আইনি সহায়তা চান। তার এই আইনি সহায়তা চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দুপুরে আমাদের একটি টিম তার বাসায় যায়। বাসায় আমরা তেমন কিছু দেখিনি। পরে তিনি থানায় আসেন, তার অভিযোগের বিষয়ে আমরা জানার চেষ্টা করেছি। পারিবারিক কলহের বিষয়গুলো তিনি আমাদের জানান।

নানা সময়ে রাজনীতির ভেতরে-বাইরের বিভিন্ন ইস্যুতে বিতর্কিত বক্তব্য রেখে আলোচনা-সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে মুরাদ হাসানকে। সবশেষ বিএনপি চেয়ারপারসন ও তার পরিবারের নারী সদস্যদের নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দেয়া নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। এই বক্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহীর সঙ্গে অশ্লীল ফোনালাপ ফাঁস হয় ডা. মুরাদের। এরপরই বেকায়দায় পড়ে যান মুরাদ। এমন কর্মকাণ্ডে চটে যান খোদ প্রধানমন্ত্রী। নির্দেশ দেন প্রতিমন্ত্রীর পদ ছাড়তে।

এরপরই শুরু হয় দলের অ্যাকশন৷ অব্যাহতি দেয়া হয় মুরাদের জেলা জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য সম্পাদকের পদ থেকে। একে একে উপজেলা, ইউনিয়নের পদ থেকেও মুরাদ হাসানকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরইমধ্যে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। আত্মগোপনে থাকাবস্থায় জমা দেন পদত্যাগপত্র। গৃহীত হওয়ায় মন্ত্রীপরিষদের তালিকা থেকে বাদ পড়েন ডা. মুরাদ।

পরে হঠাৎ করেই খবর শোনা যায় দেশ ছাড়ছেন মুরাদ। যাচ্ছেন কানাডা। কিন্তু সেখানেও ভাগ্য সহায় হয়নি তার। বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন বিভাগের কর্মকর্তাদের জেরার মুখে আর দেশটিতে ঢোকার সুযোগ পাননি সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী। পরে চলে যান দুবাই। সেখানেও ব্যর্থ হওয়ার পর আর উপায় না পেয়ে মুরাদ হাসান গত ১২ ডিসেম্বর দেশে ফেরেন। দেশে ফেরার পর ডা. মুরাদ এখন কোথায় আছেন, সেই তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তিনি এখন কোথায় আছেন, তা কেউ জানে না। তার ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। এরইমধ্যে স্ত্রী জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে অভিযোগ দিলেন।