মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী রহ.-এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সদ্য প্রয়াত মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (৫ জানুয়ারী) হেফাজত আয়োজনে খিলগাঁও মাখজানুল উলুম মাদরাসায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। হেফাজতের সিনিয়র নায়েবে আমীর আল্লামা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা শায়খ সাজিদুর রহমান, নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান চৌধুরী, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, মাওলানা আবদুল আওয়াল, মাওলানা আনোয়ারুল করীম, জামিয়া ইউনুসিয়ার মুহতামিম মাওলানা মুবারক উল্লাহ, খতমে নবুওয়াতের মহাসচিব মাওলানা মুহিউদ্দিন রব্বানী, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, মাখজানুল উলুমের মুহতামিম মাওলানা জহুরুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল কাইউম সুবহানী, মাওলানা মীর ইদ্রিস, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা উমর ফারুক প্রমুখ।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা শায়খ সাজিদুর রহমান বলেন, মাওলানা নুরুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি অনেক পরিচয়ের অধিকারী ছিলেন। তিনি একই সাথে খতমে নবুওয়াতের সভাপতি, বেফাকের সহসভাপতি, হাইয়াতুল উলইয়ার সদস্য ও হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব ছিলেন। নিকট অতীতে ওনার মতো মেধাবী ও বিচক্ষণ আলেম খুব কম পেয়েছি আমরা। তিনি দীর্ঘ সময় আকাবীরদের সাথে কাজ করেছেন। ওনার মধ্যে আকাবীরদের ঝলক দেখা যেতো। তিনি যে দায়িত্বই পালন করেছেন সেখানে সর্বোচ্চ মেধার ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। গত এক বছর আগে তিনি হেফাজত মহাসচিবের দায়িত্ব পান। দায়িত্ব পেয়ে তিনি শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ও আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির দেখানো পথে সংগঠনকে পরিচালিত করে গেছেন। মাওলানা নুরুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন শয়ইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির অত্যন্ত প্রিয় শাগরেদ ও খলিফা। আল্লামা শফী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির সাথে মাওলানা নুরুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহির যে সম্পর্ক ছিলো, তার কোনো তুলনা হয়না। তিনি আজীবন শাইখুল ইসলাম রহ. এর পদাঙ্ক অনুসরণ করে দ্বীনের খেদমত করে গিয়েছেন। আমরাও মাওলানা নুরুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহির পথ অনুসরণ করে আগামীতে হেফাজতে ইসলামের কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যেতে চাই ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, শায়খুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হেফাজতকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংগঠন হিসেবে। তিনি বারবার বলে গেছেন হেফাজতের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই। কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাও নেই। আমরাও স্পষ্ট করে বলতে চাই, হেফাজত এখনো শাইখুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, আল্লামা বাবুনগরী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ও আল্লামা নুরুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহির পথ অনুসরণ করে সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ভাবে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে এবং এই পথেই থাকবে ইনশাআল্লাহ। মাওলানা নুরুল ইসলাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি সর্বশেষ ৩ দফা দাবী জানিয়েছিলেন। আমরা আজকের এই আলোচনা সভা থেকে সেই তিনটি দাবী আবারো জানাতে চাই। এক : ইসলাম অবমাননার বিরুদ্ধে আইন পাস করতে হবে। দুই : কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। তিন : কারাবন্দী সকল আলেম-উলামাদ ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তি দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনের নামে দেশে অশ্লীলতা ও অপসাংস্কৃতির প্রচলন করা হচ্ছে, যা সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলমানদের ইমান আকিদা বিরোধী। তাদের অনিয়ন্ত্রিত ফটকা ও বাজি ফোটানো এবং ফানুস উখড়ানোর কারণে সাধারণ মানুষের জান মালের ক্ষতি হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাবো, এই ধরনের অপসংস্কৃতির চর্চা যেন আর না হতে পারে, সে বিষয় বিশেষ ভাবে নজর রাখা।