| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীকে নিয়ে আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সাক্ষাৎকার


আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীকে নিয়ে আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সাক্ষাৎকার


রহমতটোয়েন্টিফোর প্রতিবেদক     13 December, 2020     03:44 PM    


চলে গেছেন দেশের প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন,বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী। তিনি আজ রোববার বেলা ১টার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশের ইসলামি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এ ব্যাপারে রহমতটোয়েন্টিফোর থেকে আমরা মুখোমুখি হয়েছিলাম হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির, জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়া কামরাঙ্গীরচর মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জীর। তিনি কথা বলেছেন মরহুম আল্লামা কাসেমী সম্পর্কে।

রহমতটোয়েন্টিফোর : প্রথম কবে-কোথায় আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ.-এর সঙ্গে আপনার পরিচয়?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : কাসেমী সাহেব যখন ফরিদাবাদের শিক্ষক, তখন থেকেই চিনি। সেই সময় থেকেই তাঁর সঙ্গে আলাপ-পরিচয়।

রহমতটোয়েন্টিফোর : আলেম হিসেবে তিনি কেমন ছিলেন?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : অত্যন্ত ভালো আলেম ছিলেন। কওমি মাদরাসায় পড়ানো হয়, এমন সব বিষয়ে তিনি পারদর্শী ছিলেন। তার ইলমি যোগ্যতা ছিল অগাধ। কাসেমী সাহেব ছিলেন ছাত্র গড়ার কারিগর। দক্ষ আলেম হিসেবে সারাদেশে তাঁর প্রসিদ্ধি ছিল। তাঁর একটা অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি ছাত্রদেরকে নিজের সন্তানদের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। এই জন্য দেখবেন, তাঁর ছাত্ররা তাঁর জন্য ‘জানেসার’ (জীবন উৎসর্গে প্রস্তুত)।

রহমতটোয়েন্টিফোর : তার শূন্যতা কীভাবে পূরণ করা সম্ভব?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : বড় মানুষ চলে গেলে তার শূন্যতা কি আর পূরণ করা যায়! তার শূন্যতাও পূরণ হবার নয়।

রহমতটোয়েন্টিফোর : ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিল?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : খুবই ভালো সম্পর্ক ছিল। উনি মাঝে মাঝে আমাকে বলতেন, আমরা দুজনেই বার্ধক্যে পৌঁছে গেছি। বাকি জীবন ইসলাম ও মুসলমানদের খেদমতে ওয়াকফ করে দেন।

রহমতটোয়েন্টিফোর : নূর হোসাইন কাসেমীর সঙ্গে আপনার কোনও স্মৃতি কি মনে পড়ছে?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : অনেক স্মৃতিই আছে। হঠাৎ করে মনে পড়ছে, অনেক দিন আগে একবার বাসে কোথাও যাচ্ছিলাম। উনার সঙ্গে বাসেই দেখা হয়ে গেল। আমি তখন গাজীপুর খালেকিয়া মাদরাসার পরিচালক। দেখা হওয়ার পর কাসেমী সাহেবকে মাদরাসায় যাওয়ার দাওয়াত দিলাম। উনি ছোট-বড় সবাইকে খুব মূল্যায়ন করতেন। সরল মানুষ ছিলেন। অনেক ব্যস্ততা সত্ত্বেও আমার কথায় তিনি সঙ্গে সঙ্গেই রাজি হয়ে গেলেন।

রহমতটোয়েন্টিফোর : তাঁর মৃত্যুতে দেশবাসী ও ইসলামপ্রিয় জনতার প্রতি আপনার বিশেষ কিছু বলার আছে?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : এখন সবাই শোকাহত। সবার কাছে একটাই চাওয়া, সবাই মিলে তাঁর জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যেন তাঁকে জান্নাতের আলা মাকাম দান করেন। তার পরিবার-পরিজন, ছাত্র-ভক্ত, স্বজন ও হিতাকাঙ্ক্ষীরা যেন এই শোক সইতে পারেন, এই দোয়া করি সবাই। এবং তাঁর রেখে যাওয়া সকল দ্বীনী কাজ ও চিন্তাধারা বাস্তবায়নে সবাই যেন সচেষ্ট হয়।

রহমতটোয়েন্টিফোর : আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রহ.-এর সঙ্গে শেষ দেখা কবে হয়েছিল?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : এই তো গত সোমবার হাসপাতালে উনাকে দেখতে গেলাম। উনি আমাকে দেখেই বিছানা ছেড়ে উঠতে চাইলেন। কিন্তু সেই শক্তি ছিল না উনার।

রহমতটোয়েন্টিফোর : কাসেমী সাহেবের সঙ্গে আপনার সর্বশেষ কী কথা হয়েছিল?
আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী : কাসেমী সাহেব আমাকে বলেছিলেন, ‘আমার জন্য দোয়া করবেন’। এই একটি বাক্যই ছিল আমার সঙ্গে উনার শেষ কথা। আরও কথা বলতে চাচ্ছিলেন, বলতে পারছিলেন না। শেষ সময়ে মানুষের যেমন হয়। চোখেমুখে কথা থাকে, কিন্তু বলতে পারে না মানুষ। অনেক চেষ্টা করছিলেন আমাকে দেখে আরও কথা বলতে। এরপর আমরা তাঁর শয্যাপাশে দাঁড়িয়ে তার জন্য দোয়া করছিলাম। তিনি শুনে আমিন আমিন বলছিলেন।