রহমত নিউজ 07 October, 2025 07:54 PM
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে চীনের তৈরি ২০টি জে-১০ সি মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান কেনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই ৪.৫ প্রজন্মের যোদ্ধা জেট কেনা, প্রশিক্ষণ ও আনুষঙ্গিক খরচসহ মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২২০ কোটি ডলার (প্রায় ২৭,০৬০ কোটি টাকা)।
প্রকল্প নথিপত্র অনুযায়ী, জে-১০ সি কেনার চুক্তিটি সরাসরি ক্রয় বা গভর্নমেন্ট টু গাভর্নমেন্ট (G2G) পদ্ধতিতে চীনের সঙ্গে করা হতে পারে। মোট ব্যয় ১০ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে পরিশোধের শর্তে (২০৩৫–২০৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত) নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সম্ভাব্য হিসাব অনুযায়ী, প্রতিটি ফাইটার জেটের মূল্য প্রতিক্রমে প্রায় ৬ কোটি ডলার, ফলে ২০টি বিমানের মূল্য দাঁড়ায় ১২০ কোটি ডলার (প্রায় ১৪,৭৬০ কোটি টাকা)। বাকি অংশে স্থানীয় ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, পরিবহন, বীমা, ভ্যাট, কমিশন ও পূর্ত কাজসহ অন্যান্য খরচ যোগ করে মোট ২২০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে।
চুক্তি চূড়ান্ত করতে গত এপ্রিলে বিমানবাহিনী প্রধানকে সভাপতি করে ১১ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়; এই কমিটি খসড়া চুক্তিপত্র নিরীক্ষণ, G2G পদ্ধতির উপযুক্ততা বিচার ও চীনা প্রতিনিধিদের সঙ্গে দরকষাকষি করে চূড়ান্ত মূল্য ও পরিশোধ শর্ত নির্ধারণ করবে। চুক্তিতে যুদ্ধবিমানের সংরক্ষণ সহায়তা, প্রশিক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ ব্যবস্থাপনা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল এ এন এম মনিরুজ্জামান (অব.) বলেন, বিমানবাহিনীর যুগোপযোগী জঙ্গিবিমানের প্রয়োজন আছে; তবে কোনো দেশের কাছ থেকে কেনার আগে ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করা জরুরি, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রতিযোগিতা তীব্র থাকা সময়ে।
বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে মোট ২১২টি এয়ারক্রাফট, যার মধ্যে ৪৪টি ফাইটার জেট আছে; এদের মধ্যে ৩৬টি চীনা নির্মিত এফ–৭ এবং এছাড়া কয়েকটি মিগ-২৯ ও ইয়াক–১৩০ লাইট অ্যাটাক বিমান রয়েছে। জে-১০ সিরিজ যুক্ত হলে এটি বিএএফের আধুনিকায়নে উল্লেখযোগ্য সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হবে।